রিমাল ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বিপর্যস্ত বাংলা। দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রবিবার রাতের প্রবল ঝড়ের কারণে নদী বা সমুদ্রের আশপাশে বসবাসকারী মানুষদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণহানির খবরও মিলছে। তারইমধ্যে রিমাল নিয়ে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি জানান, নিহতদের পরিবারবর্গকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই, তাঁদের নিকটজনের হাতে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা পৌঁছাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় দীর্ঘ পোস্ট করেন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। জানান, পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য। তাই প্রতিবারই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে এবার জীবনহানি কম হয়েছে। নির্বাচনের আচরণবিধি উঠে গেলে রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবস্থা করবে। যাঁদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের সাহায্য করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে। প্রতিবছরই তাই আমাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এবারো সাইক্লোন ‘রেমালে’র প্রভাবে আমাদের রাজ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হল ও হচ্ছে। কিন্তু সবার উপরে মানুষের জীবন। সৌভাগ্যক্রমে এবং অবশ্যই রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় এবার জীবনহানি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। নিহতদের পরিবারবর্গকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই, তাঁদের নিকটজনের হাতে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা পৌঁছাবে। ফসলের ও বাড়িঘরের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণের বন্টন আইন-মোতাবেক প্রশাসন এখনই দেখে নেবে এবং নির্বাচনের আচরণবিধি উঠে গেলে আমরা এই সব বিষয় আরো গুরুত্ব দিয়ে পুরোটা বিবেচনা করব।
নির্বাচনী বন্দোবস্তের ব্যস্ততা সত্ত্বেও সর্বস্তরে আমাদের প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবিলায় এবার প্রস্তুত ছিল। মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে আমার রাজ্যের সম্পূর্ণ সচিবালয়, জেলা প্রশাসন থেকে ব্লক প্রশাসন – দুর্যোগের মোকাবিলায় সকলে সংহতভাবে সবসময় মানুষের পাশে রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। দুলক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় ১৪০০ শিবিরে সরানোর কৃতিত্ব আমাদের পুরসভা – পঞ্চায়েতগুলিরও। এজন্য আমি রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের সকলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আমি বিশ্বাস রাখি, সকলের সহযোগিতায় এই ঝড়ও আমরা কাটিয়ে উঠব। আমি জানি, এই দুর্যোগে আপনারা চিন্তিত। আমরাও চিন্তিত। কিন্তু ভয় পাবেন না, চিন্তা করবেন না। পরিস্থিতির মোকাবিলায় যা যা করণীয়, আমরা সবটাই করবো।'
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে রবিবার রাতে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। তার প্রভাব পড়ে শহর কলকাতায়। ব্য়াপক বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন হয়ে পড়ে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা থেকে ১১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে রিমাল। সন্ধে পর্যন্ত এই রিমাল ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকবে। তবে তারপর তা অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ফলে ঝোড়ো হাওয়া কমবে। তবে বৃষ্টি চলতে থাকবে। যদিও আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে কাল মঙ্গলবার থেকে।