তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে নিজের ছাত্র জীবনের কথা শেয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমি গর্বিত যে ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। আমি ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট।' তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ছাত্র জীবনের একের পর এক ঘটনার উল্লেখ করেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ছাত্র রাজনীতি করার সময় আমি দুধের ডিপোতে কাজ করেছি। সেই টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খবর করতাম। সেই সময় যোগমায়া কলেজ ইউনিটের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। পোস্টার ব্যানার করতাম। দুধের ডিপোতে কাজ করে যে টাকা পেতাম তা দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতাম।'
ঘটনা ২ - মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, 'বিএ পার্ট ওয়ান পরীক্ষার আগের দিন ডান হাতের বুড়ো আঙুলটা বোতলে ঢুকে যায়। গলগল করে রক্ত পড়ছিল। তাই দিয়েই পরীক্ষা দিই।'
ঘটনা ৩- মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,'ছাত্র রাজনীতি করার সময় CPM আমাকে বোম নিয়ে তাড়া করেছে। বন্দুক নিয়ে তাড়া করেছে। গলগল করে রক্ত পড়েছে।'
ঘটনা ৪- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ভোর চারটেতে উঠতে হত ছাত্রজীবনে। আমার সঙ্গে লড়াই ছিল ডিএসওর। আমার বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তার কাছে গল্প শুনে শুনে আমাদের মনটা জাগরিত হয়েছিল। তাই অন্য কোনও দলে যেতে পারিনি।'
ঘটনা ৫- 'একদিন দেখলাম কংগ্রেস সিপিএম-র সঙ্গে আঁতাত করে এমন করল যে ২১ জুলাই অনেকে শহিদ হল। কংগ্রেস একটা লোককেও পাঠাল না। তখন আমি কংগ্রেস করতাম।'
ঘটনা ৬- 'একবার আমতার কান্দুয়ায় হাত কেটে দেওয়া হল। একটা লোককেও পাঠাল না। মেমারিতে চারজন নকশালকে কুচি কুচি করে খুন করা হল। একটা লোককেও পাঠাইনি কংগ্রেস। হলদিয়ায় আমি দেখলাম, আমাদের মাইক দেওয়া হয়নি। চা দেওয়া হয়নি। চমকাইতলাতে মিটিং করতে গেছি। সেখানে স্টেজ বাঁধতে দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকে কাপড় এনে করলাম স্টেজ।'
ঘটনা ৬- মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,'অজিত পাঁজাকে বোমা ,গুলি নিয়ে হামলা চালাল। রাস্তায় আটকে দিয়েছিল। তাঁকে ঘিরে ধরেছিল। আমি তাকে উদ্ধার করে আনলাম। তখন বন্দুক, গুলি চলছে। আমি বললাম চালাও গুলি। আমি মরার ভয় পাই না। এরকম অনেক ঘটনা আমি দেখেছি।'
ঘটনা ৭-'হাজরায় আমাকে ঘিরে ফেলল। লোহার চেন দিয়ে ঘিরে ফেলল। এই গল্পটা কল্য়াণ আমাকে শুনিয়েছে। বলল, দিদি আমি তখন দূরে দাঁড়িয়ে। বাঁশগোলার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। বলল হঠাৎ রাস্তাটা খালি করে দিল। যাতে কেউ না আসতে পারে। আমাকে তাড়া করল। ওরা প্রথমে আমাকে ডান্ডা মারল। আমার ডানদিকটা থেকে গলগল করে রক্ত পড়ছে। বিশ্বাস করুন আমার লাগেনি। ফের আর একটা ডান্ডার বাড়ি। এবার বাম দিক থেকে রক্ত পড়ল। তৃতীয় বার ডান্ডা মারতে গেল। আমার ব্রেন ম্যাসড হয়ে যা্ওয়ার কথা। হাত মাথায় দিলাম। হাতে চোট পেলাম। সেদিন আমার মাথাটাই পিষে যেত।'
ঘটনা ৮- 'একবার রটে গেল আমি গেছি। পার্লামেট মুলতুবি হয়ে যায়। একুশে জুলাই মেরেছিল কোমরে। সেই থেকে কোমরে বেল্ট পড়ে ঘুরতে হয়। সারা শরীর আমার ভগ্ন। আমি জিন্দা লাশ হয়ে বেঁচে আছি। যখন কেউ ভাবতে পারেনি, বাংলা থেকে বাম বিদায় নেবে। আমরা করে দেখিয়েছি।'