কলকাতায় এবার গণপিটুনির অভিযোগ উঠল। শুক্রবার বউবাজার এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোবাইল চোর সন্দেহে ওই যুবককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল চুরির সন্দেহে এক যুবককে হস্টেলে মারধর করা হয়। নিহত যুবকের নাম ইরশাদ। চাঁদনি চক এলাকায় টিভি সারাইয়ের দোকানে কাজ করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, হস্টেলে এক আবাসিকের মোবাইল ফোন চুরি যায়। শুক্রবার সকালে হস্টেলের পাশে এক দোকানের মালিক পড়ুয়াদের জানান যে, একটি লোক এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। তারপরেই ওই যুবককে ধরে হস্টেলে নিয়ে এসে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বউবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে যায় মুচিপাড়া থানার পুলিশও। পরে ওই যুবককে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরেই চোর সন্দেহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। বুধবার শিশু চুরির অভিযোগে গোলমাল বাধে বিরাটি স্টেশনে। অভিযোগ ওঠে, শিয়ালদাগামী একটি ট্রেনে এক মহিলা যাত্রীকে দেখে সন্দেহ হয় যাত্রীদের একাংশের। ওই মহিলা যাত্রীর হাতে শিশু ছিল। ওই মহিলা শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে সন্দেহ হয় বাকি যাত্রীদের। এরপরই ওই মহিলা যাত্রীকে আটক করে রেলপুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় বিরাটি স্টেশনে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে রেল পুলিশ। পরে রেল পুলিশের তরফে জানানো হয়, চুরির অভিযোগ মিথ্যা। শিশুটির মা ওই মহিলাই।
দিনকয়েক আগে ছেলেধরা সন্দেহে বেড়াচাঁপা মুদিপাড়ায় এক মহিলাকে আটকে রেখে থানায় খবর দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। দেগঙ্গার ওধনপুর গ্রামে কোলে শিশুসন্তান নিয়ে দুই মহিলাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। তখন তাদের আটকে রেখে দেগঙ্গা থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দু'জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার গাঁইঘাটাতেও। প্রসঙ্গত, বারাসতের কাজিপাড়ায় বালক খুনের ঘটনার পর থেকেই ছেলেধরা গুজব ছড়াচ্ছিল। তার পরিণতিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। সোশালমিডিয়ায় ছেলেধরা নিয়ে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় উত্তর ২৪ পরগনায়। তার পরেই বারাসত, খড়দা, অশোকনগরে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে।