scorecardresearch
 

EXCLUSIVE: কয়েল-তেলেও আর মশা মরছে না, 'জিন-পরিবর্তন', দিশেহারা পুরসভা

শীতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়তেই ফের বাড়ছে মশার প্রকোপ। সন্ধ্যার পর থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ঘিরে ধরছে মশার দল। মশার উপদ্রবে সল্টলেক থেকে দমদম পার্ক, কেষ্টপুর-বাগুইহাটি থেকে নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জেরবার বাসিন্দারা। সবথেকে বেশি সমস্যায় বিধাননগর পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, সন্ধেয় তো বটেই, এমনকি দিনে দুপুরেও বাড়ির বাইরে বেরোতে ছেঁকে ধরছে মশা। ফলত, ডেঙ্গির ভয়ে কাঁটা লোকজন। কোমর বেঁধে নেমেছে পুর-কর্মীরাও। কিন্তু মশা বাগে আনা যাচ্ছে না।

Advertisement
হাইলাইটস
  • শীতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়তেই ফের বাড়ছে মশার প্রকোপ।
  • সন্ধ্যার পর থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ঘিরে ধরছে মশার দল। মশার উপদ্রবে সল্টলেক থেকে দমদম পার্ক, কেষ্টপুর-বাগুইহাটি থেকে নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জেরবার বাসিন্দারা।

শীতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়তেই ফের বাড়ছে মশার প্রকোপ। সন্ধ্যার পর থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ঘিরে ধরছে মশার দল। মশার উপদ্রবে সল্টলেক থেকে দমদম পার্ক, কেষ্টপুর-বাগুইহাটি থেকে নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জেরবার বাসিন্দারা। সবথেকে বেশি সমস্যায় বিধাননগর পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, সন্ধেয় তো বটেই, এমনকি দিনে দুপুরেও বাড়ির বাইরে বেরোতে ছেঁকে ধরছে মশা। ফলত, ডেঙ্গির ভয়ে কাঁটা লোকজন। কোমর বেঁধে নেমেছে পুর-কর্মীরাও। কিন্তু মশা বাগে আনা যাচ্ছে না।

পতঙ্গবিদদের দাবি, পাল্টে যাচ্ছে ডেঙ্গি-বাহক মশার স্বভাব। জিনগত পরিবর্তনের ফলেই এডিস মশার বৃদ্ধি আটকাতে পারছে না প্রচলিত কীটনাশকও। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি প্রতিরোধে জনসচেতনতায় জোর দিচ্ছেন পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা। 

কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস 'আজতক বাংলা'কে বললেন, 'মার্চ মাস পর্যন্ত যেসব এলাকায় গালিপিট, ক্যানাল, খাল, নোংরা জলের ডোবা যে এলাকাগুলিতে থাকে, সেখানে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়তে থাকে। বাড়া শুরু হয় নভেম্বর থেকেই। সেই বাড়বাড়ন্ত মার্চে সর্বোচ্চ হয়। যেকারণে কিউলেক্স মশার আর এক নাম মার্চ মসকিউটো। সল্টলেক বা নাগেরবাজারে এখন যে মশারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, সেগুলো ডেঙ্গির মশা নয়। সেগুলি কিউলেক্স মশা। খুব গরম পড়লে ওই মশার লার্ভা মরতে থাকবে। কমতে থাকবে মশার উপদ্রব।'

দেবাশিসবাবু আরও বলেন, 'কিউলেক্স মশা যেখানে জন্মাচ্ছে, সেখান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে উড়ে যেতে পারে। পুরসভার উচিত খোলা ড্রেনগুলো পরিস্কার করা। লার্ভিসাইড স্প্রে করা। খোলা ক্যানালের পারেও স্প্রে করতে হবে। এবং জল কোনওভাবেই জমতে দেওয়া হবে না। রাস্তাধারের গালিপিটগুলো পরিস্কার করতে হবে। ওগুলোই মশার আতুঁড়ঘর।'

আরও পড়ুন-ভরা বসন্তে মারণ ডেঙ্গি, দুশ্চিন্তায় বিধাননগর পুরসভা, কী কী ব্যবস্থা?

মশার জিনগত পরিবর্তন নিয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, 'মশা পৃথিবীতে এসেছে ২৬ কোটি বছর আগে। মানুষ এসেছে ২০ লক্ষ বছর আগে। তাই পৃথিবীটা মানুষের থেকে মশারা অনেক বেশি চেনে। তাই মশাকে আঁতুড়ে বিনাশ করতে হবে। মশারা দ্রুত রণকৌশল পাল্টে ফেলছে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আগে যে কীটনাশকে মশা মরত, এখন সেগুলিতে এখন মশা মরে না। আগে ঘরের চৌবাচ্চায় ডিম পাড়ত ডেঙ্গির মশা। এখন বাইরে ডিম পাড়ছে। গাছের গর্তে ডিম পাড়ছে। কচু ও কলাগাছের পাতার খাঁজে ডিম পাড়ছে। আগে মাটিতে ডিম পাড়ত। এখন ছাদে ডিম পাড়ছে বেশি। মশা খুবই চালাক পতঙ্গ।' 

Advertisement

বিধাননগর পুরসভার বিরুদ্ধে কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার হয়নি। এমন একাধিক কারণে ফের মশার প্রকোপ বেড়েছে সল্টলেক, নিউটাউন, গোলাঘাটা, লেকটাউন, দমদম পার্ক-সহ বিধাননগর কমিশনারেটের ৯টি থানা এলাকায়। সন্ধেয় স্থানীয় পার্কে কিছুটা সময় কাটান প্রবীণ নাগরিকেরা। ইদানীং সন্ধ্যার পরে সেখানে বসার উপায় থাকছে না। নাকেমুখে মশার ঝাঁক ঢুকে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। যাদের বাইরে বসতে হচ্ছে, তাঁরা ডিমের ক্রেট পোড়াচ্ছেন। 

বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সর্বত্র ঝোপ-জঙ্গল সাফ করা হয় না। উপরন্তু মশা তাড়াতে যে ওষুধ স্প্রে করা হয়, তাতেও কাজ হচ্ছে না। আবার মশার তেল সর্বত্র না স্প্রে করার অভিযোগও বাসিন্দাদের তরফ থেকে শোনা গিয়েছে।

বিধাননগর পুরসভার অবশ্য দাবি, তাঁরা বছরভর মশা তাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছেন। মশার প্রকোপ বৃদ্ধির সমস্যা কার্যত স্বীকার করে তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন।

বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিতে 'আজতক বাংলা'কে বলেন, 'মশার প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। বছরভর মশা তাড়াতে পুরসভা কাজ করে চলেছে। নর্দমায় নিয়মিত তেল ছড়ানো ও সচেতনতা ক্যাম্প করার পর থেকে মশা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মশার বাড়বাড়ন্ত রুখতে পুরসভা সক্রিয় রয়েছে। খাল ও খালপাড়ে মশার তেল স্প্রে করার পাশাপাশি ঝোপজঙ্গল সাফাই ও ফগিংয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে। ওই মশার বেশিরভাগই গাছে ডিম পাড়ছে। তাই একটা কালবৈশাখী হলে মশা কমে যাবে।'


 

Advertisement