সূচনা শেঠ। নিজের চার বছরের পুত্র সন্তানকে খুনে অভিযুক্ত। সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। একজন চিকিৎসক জানান, নিজের সন্তানকে খুন করেছে সূচনা। তাকে কর্নাটকের চিত্রদুর্গতে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার রাতে তাকে গোয়ায় আনা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, পুত্র সন্তানকে খুন করে ব্যাগের ভিতর ভরে ট্যাক্সিতে পালানোর চেষ্টা করছিল সূচনা। তবে তার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে মৃতদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
কলকাতাতেই সূচনার পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা। কলকাতার ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি থেকে ফিজিক্সে অনার্স সহ স্নাতক হয় সূচনা। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করে। পরে বিদেশেও লেখাপড়া করে।
ঠিক কীভাবে চার বছরের ছেলেকে খুন করা হয় ?
হিরিউর তালুক হাসপাতালের অফিসার ডাক্তার কুমার নায়েক জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, নিজের সন্তানতে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। হয় কাপড় বা বালিশ ব্যবহার করা হয়েছে এক্ষেত্রে। শ্বাসরোধে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। শিশুটিকে শুধু হাত দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে বালিশ বা অন্য কোনও জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে।'
ওই চিকিৎসক আরও জানান, 'আমাদের দেশে কারও মৃত্যুর প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর পেশি সংকুচিত হতে শুরু করে। তবে এক্ষেত্রেও এই বাচ্চাটির পেশি সংকুচিত হয়েছিল। তাই মনে করা হচ্ছে ৩৬ ঘণ্টা আগেই খুন করা হয়েছিল।'
এদিকে ঘটনার পর জাকার্তা থেকে ফিরে আসেন সূচনার স্বামী রমণ। তিনিই তাঁর সন্তানের দেহের ময়নাতদন্তের অনুমতি দেন।
ঘটনা কীভাবে সামনে এল ?
পুলিশ জানিয়েছে, যে অ্যাপার্টমেন্টে সূচনা ছিলেন সেখানকার কর্মীরা একটি তোয়ালেতে রক্তের দাগ দেখতে পান। তারপরই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। কর্মীদের মতে, অভিযুক্ত মহিলা তাঁদের জানিয়েছিল, তিনি বেঙ্গালুরু যেতে চান। সেজন্য তার ট্যাক্সি দরকার।
তখন সেই কর্মীরা পরামর্শ দেন, তিনি বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য ফ্লাইট নিতে পারেন। তবে সূচনা তাতে রাজি হয়নি। সেই মোতাবেক 8 জানুয়ারি একটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। খুব ভোরে হোটেল থেকে বেরিয়ে যায় সূচনা। এরপর অ্যাপার্টমেন্টের কর্মীরা যে ঘরে ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি তোয়ালেতে রক্তের দাগ দেখতে পায়।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ছেলেকে হত্যার পর বাম হাতের কব্জি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সূচনা। কিন্তু পরে সে মন বদলায়। এবং ছেলের দেহ একটি ট্যুরিস্ট ক্যাবে নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে যায়।
সূচনা শেঠের সঙ্গে রমনের বিয়ে হয় ২০১০ সালে। তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত বলে খবর। তার জেরে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হয়। তাতে অনুমতি মেলে কোর্টের। কোর্ট নির্দেশ দেয়, প্রতি রবিবার রমন তার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারবে।