শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই হইচই রাজ্য বিধানসভায় ৷ বিরোধীদের মুলতুবি প্রস্তাবে আলোচনার অনুমতি না মেলায় তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি ৷ এরপর তারা বিধানসভা থেকে ওয়াক-আউট করে ৷ এদিকে মঙ্গলবার বিধানসভায় সাসপেন্ড করা হল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। শুভেন্দুর সঙ্গে স্পিকারের তুমুল তর্ক বাঁধে এদিন। তাঁকের মাঝে সতর্কও করেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই শীতকালীন অধিবেশনে শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অসম্মানজনক আচরণের জন্য তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এদিন বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে সাসপেনশন মোশন আনেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। সেই প্রস্তাবে সম্মত হন স্পিকার। এর আগেও গত বছর মার্চে বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন সাসপেন্ড করা হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। সূত্রের খবর, এদিনের সিদ্ধান্তের পর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পরিকল্পনা নিচ্ছে বিজেপি।
এদিন প্রথম দফায় অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। দ্বিতীয় অর্ধে সংবিধান দিবস নিয়ে আলোচনা শুরু হলে শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-সিবিআই অনেককে গ্রেফতার করছে। তৃণমূল বলছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।” তখনই শাসকদলের বিধায়করা বিরোধিতায় সরব হন। এর পরই দলবদল করা বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে মন্তব্য করেন শংকর। যা বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন স্পিকার। এর পরই সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, এটা ‘এক্সপাঞ্চ’ করার মতো বক্তব্য নয়। যদি এ বক্তব্য ‘এক্সপাঞ্চ’ করা হয়, তাহলে তাঁরা অধিবেশনে সংবিধান দিবস নিয়ে যে ২ ঘণ্টা আলোচনা চলছে, সেখানে অংশ নেবেন না। প্রতিবাদ জানিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা।
এদিকে শুভেন্দু অধিবেশন কক্ষে থাকাকালীনই অধ্যক্ষ জানান, ‘শুভেন্দুবাবু আপনি ঠিক আচরণ করছেন না। আপনাকে সতর্ক করছি। নিয়ম অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এরপরই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে শাসকদলের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায় একটি মোশন আনেন। বলেন, ‘যাঁরা কোনওদিন সংবিধান হাতেই ধরেননি তাঁরা সংবিধান বুঝবেন কী করে?’ তিনি প্রস্তাব করেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা হোক। কিছুক্ষণ পরেই শুভেন্দু অধিকারীকে এই অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বস্তুত, মঙ্গলবার অধিবেশনের শুরু থেকেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়কদের নিয়ে ঘোরালো হয় পরিস্থিতি। এর আগে ২০২২ সালের ২৮ মার্চ শুভেন্দু-সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড হন। ওই অধিবেশনের আগে দু’জন বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড হন। মোট সাত জন বিধায়ক সাসপেন্ড হন। পরে অবশ্য আদালতের হস্তক্ষেপে সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয় তাঁদের।