আলু এমন একটি সবজি যাকে ছাড়া রান্না অসম্পূর্ণ। আর সেই আলু নিয়েই এবার রাজ্যে ঘনাচ্ছে সংকট। আলু ভর্তি গাড়ি ভিন রাজ্যে যেতে আটকে দেওয়ার অভিযোগে আজ, সোমবার থেকে রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়িক সমিতির কর্মবিরতির ডাকের বিরাট প্রভাব পড়তে পারে আলুর দামে এমনিতেই বাজারে সব সবজিরই আগুন-দাম। এক লাফে অনেকটাই মহার্ঘ্য হয়েছে আলু। এবার তা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। আজ থেকে শুরু হওয়া নতুন সপ্তাহে আলুর দাম আরও চড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কোনওভাবেই ভিন রাজ্যে আলু পরিবহণ নয়। দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। রাজ্যজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মবিরতির জেরে বাংলার বাজারে আলুর জোগান কমার আশঙ্কা ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। বাড়ছে উদ্বেগ। মঙ্গলবার থেকেই বাজারে দেখা দিতে পারে আলুর সঙ্কট। সমস্যায় ক্রেতারা। এই অবস্থায় মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলছেন, “আলুর দাম হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে। আমরা সকলকেই অনুরোধ করেছি, যাতে একবারে না বাড়ে। দেখা যাচ্ছে, সরকারি নির্দেশিকা দিয়েছি। তাঁদের কর্মবিরতি নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করে একটা রাস্তা বেরোবে।”
প্রসঙ্গত, শনিবার, ২০ জুলাই বাঁকুড়ার জয়পুরের একটি বেসরকারি রিসর্টে বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সেখানেই রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংগঠনটির তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে চাষিদের থেকে আর কোনও আলু কেনা হবে না। শুধু তাই নয়, বন্ধ থাকবে হিমঘর থেকে বাজারে আলু নিয়ে আসার কাজও। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলা থেকে ভিন রাজ্যে সরবরাহ হয় আলু। কিন্তু সম্প্রতি এর দাম বেড়ে যাওয়ায় কড়া সিদ্ধান্ত নয় নবান্ন। এখানে থেকে ভিন রাজ্যে আলু পরিবহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নবান্নের তরফে এই নির্দেশ জারির পরই পড়শি রাজ্যের সীমানায় তাঁদের গাড়ি আটকাতে শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। ফলে আর্থিকভাবে মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়ছেন তাঁরা। ফলে বাধ্য়ে হয়ে কর্মবিরতিতে যেতে হচ্ছে তাঁদের।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ডাকা ধর্মঘটের প্রভাবে বন্ধ থাকতে পারে আলু সরবরাহ। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিনবঙ্গ, যাঁরা হিমঘর থেকে আলু বের করে বাজারে সরবরাহ করার কাজটি করেন, তাঁরাই কর্মবিরতিতে। তার জেরে রাজ্যের অধিকাংশ হিমঘর থেকে আলু বের করা হয়নি সোমবার। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, 'আমরা যে বাজারে আলু সরবরাহের কাজ করি সেটা সোমবার থেকে বন্ধ আছে কর্মবিরতির জন্য। সারা রাজ্য প্রায় ৮০ হাজার ব্যবসায়ী এই কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন। ভিন রাজ্যে আলু যেতে আমাদের গাড়ি পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। সেটা যাতে বন্ধ হয়, তার জন্যই ধর্মঘট। মুখ্যমন্ত্রী যাতে বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করে সে বিষয়ে আমরা আশাবাদী।'