সোমবারের অভিশপ্ত দিন কাটিয়ে অবশেষে আজ ভোরে শিয়ালদা এসেছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের অক্ষত অংশ। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৩ টে বেজে ১৬ মিনিট,মঙ্গলের ভোরের আলো তখনও ফোটেনি,শিয়ালদার ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকল ১৩১৭৪ ডাউন আগরতলা-শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। শহরের মাটিতে পা দিয়ে যেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন ১২৯৩ যাত্রী। মৃত্যুকে ছুঁয়ে কপালজোরে ঘরে ফেরা, যাত্রীদের চোখে মুখে লেগে চরম আতঙ্কের ছাপ। শিয়ালদহ স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । তাঁর সঙ্গে ছিলেন শিয়ালদহের ডিআরএম দীপক নিগম এবং রেলের অন্যান্য অফিসাররা।
কেমন আছেন যাত্রীরা, কারও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং রেলকর্তারা। গতকাল, উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পথেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাতে শিয়ালদহ নামার পর যাত্রীরাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্টেশন চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকবে একাধিক সরকারি বাস। সেই মতোই দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
শিয়ালদা স্টেশনে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রেলের দিকে তোপ দাগেন ফিরহাদ হাকিম। পুরমন্ত্রী বলেন, 'মানুষের অভিজ্ঞতা খুব মর্মান্তিক, ৩ দিন ধরে ট্রেনে রয়েছেন, হঠাৎ করে মৃত্যু ফাঁদ, তার থেকে বেরিয়েছেন, অনেকেই আহত, আমাদের যেটুকু করার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা করেছি, কিন্তু ভারতীয় রেলের কী হবে, এটা বড় প্রশ্নের মুখে, আমাদের কাজ আমরা করছি, আমরা প্রাণ হাতে নিয়ে রেলে চড়ব, ভগবানের কৃপায় ফিরতে পারেল ফিরব নইলে মৃ্ত্যু।' রেলযাত্রা নিয়ে ফিরহাদ বলেন, 'আমি নিজেও নিরাপদ মনে করি না , বন্দে ভারতে যাতায়াত কর,এবার ইনস্যুরন্সে বাড়িয়ে যেতে হবে।'
সোমবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও রেলের সমালোচনা করেছিলেন। মমতা বলেছিলেন,‘এখন শুধুই বন্দে ভারতের নামে পাবলিসিটি (প্রচার)। দুরন্ত এক্সপ্রেস ছিল সব চেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন। ওটা আমি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুধুই অবহেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’ পাশাপাশিই মমতা বলেন, ‘আমি রেলকর্মীদের পাশে রয়েছি।’ মমতার মূল অভিযোগের তির কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেল মন্ত্রকের দিকে। তাঁর সুস্পষ্ট অভিযোগ, যাত্রীনিরাপত্তার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ব্রাত্য করে রেখে কেবল উপর চকচকানিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।