সোদপুরে থাকতেন আরজি কাণ্ডে নির্যাতিতা তরুণী ডাক্তার। গত ৯ অগাস্ট হাসপাতালের সেমিনাররুমে ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে। তারপর থেকে উত্তাল গোটা রাজ্য। প্রতিবাদে মুখর জনপদ। অনেকেই বলছেন, এ বছর উৎসব বন্ধ থাকুক। পুজো হোক। সেই নির্যাতিতার বাড়ির অদূরেই বিরাট 'দুর্গোৎসব'।
এত বড় সত্যি! ২০১৫ সালে দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের প্রতিমা হইচই ফেলে দিয়েছিল গোটা শহরে। সেই পুজোর উদ্বোধনের দিনই যে ভিড় হয়েছিল, তা থমকে দিয়েছিল গোটা কলকাতার ট্রাফিক। সেবার ছিল ৮৮ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা। এবারও বৃহদাকার প্রতিমা গড়তে চেয়েছিলেন নদিয়ার উদ্যোক্তারা। অনুমতি মেলেনি। তবে সোদপুরে সেটা সম্ভব হয়েছে। ১১০ ফুটের সুবিশাল দেবীমূর্তি গড়েছে পানিহাটি পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ কলোনি সর্বজনীন দুর্গাপুজো। আসলে এই বিশাল মূর্তিই পুজোমণ্ডপ।
রানাঘাটের কামালপুরে ১০০ ফুটের দুর্গামূর্তি তৈরির অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। অর্ধেক কাজ এগোনোর পর থমকে গিয়েছে। কিন্তু সোদপুরে ১১০ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছে পানিহাটির ধানকল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পুজো কমিটি। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, নদিয়ার পুজো অনুমতি না পেলেও এই পুজো কীভাবে প্রশাসনিক ছাড়পত্র পেল? উল্লেখ্য, নির্যাতিতার বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরেই এই পুজো হচ্ছে। গুগল ম্যাপ ধরে চললে দূরত্ব ৫.৩ কিলোমিটার। সময় লাগবে ২১ মিনিট।
এ বছর ৭৫ তম বর্ষে পড়েছে এই পুজো। গতবছর হীরক জয়ন্তীর পুজোয় অভিনবত্ব আনার পরিকল্পনা করেছিলেন উদ্যোক্তারা। ফাইবার দিয়ে তৈরি হয়েছে ১০০ ফুট উচ্চতা এবং ১২০ ফুট চওড়া মাতৃমূর্তি। মণ্ডপসজ্জার দায়িত্বে পানশিলার শিল্পী চিরঞ্জিত দাস। মণ্ডপে ভিতরে যে মাতৃ প্রতিমা রয়েছে, তাতেও থাকছে চমক। পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা তথা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জয়ন্ত দাস জানান, আগে কখনও মানুষ এত বড় নিখুঁত পরিপাটি দুর্গা তৈরি হয়নি।
নদিয়ার মণ্ডপ ছাড়়পত্র পায়নি। আপনারা কীভাবে পেলেন? পুজো উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান,'প্রতিবারই আমাদের চমক থাকে। এ বছর আমাদের চমক হল ৭৫-এ ১০০। আমাদের মণ্ডপ ১০০ ফুটের। বহিঃরূপ দুর্গাপ্রতিমার আদলে করেছি। রানাঘাটের বিষয়টি বিচারাধীন। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আমাদের দর্শক সামলানোর জন্য সব ব্যবস্থা রয়েছে। নিজেদের ভলান্টিয়ার থাকবে। মাইকিং হবে। কোনও অসুবিধা হবে না দর্শনার্থীদের'।