অনশনকারী চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ধর্মতলায় স্বাস্থ্যদপ্তরের ৪ সদস্যের টিম
অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের হাল দেখতে বৃহস্পতিবার চার চিকিৎসকের একটি বিশেষ দল গঠন করেছে রাজ্য। সেই দলই রাতে ধর্নামঞ্চে গিয়ে অনশনকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। ওই দলে রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিনের চিকিৎসক নীলাদ্রি সরকার, নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক অতনু বিশ্বাস, জেনারেল সার্জারির ডিকে সরকার, কার্ডিয়োলজি বিভাগের গৌরাঙ্গ সরকার। অনশনকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নীলাদ্রি বলেন, ‘‘চার দিন পার হয়ে গিয়েছে। শারীরিক অবস্থা আসতে আসতে খারাপ হচ্ছে। ওঁদের এখন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। তবে অনশনকারীদের মধ্যে অনিকেত মাহাতো এবং স্নিগ্ধা হাজরাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে ভাল হয়।’’
ত্রিধারাকাণ্ডে ৯ জনের ৭ দিন পুলিশ হেফাজত
ত্রিধারার সম্মিলনীর পুজো মণ্ডপের সামনে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' বলে স্লোগান দেওয়া ৯ জনকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর কোর্ট। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরা থাকবেন পুলিশ হাজতেই। ৩টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছিল পুলিশ।
সরকারের উদাসীনতা এবং সিনিয়রদের উদ্বেগ
সিনিয়র ডাক্তারদের একাংশ জুনিয়রদের অনশন থেকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি যথার্থ হলেও, জীবন ঝুঁকিতে ফেলে এই লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে তাঁরা বলেছেন, জুনিয়রদের দাবিগুলির প্রতি আরও মানবিক ও উদার মনোভাব দেখানো উচিত। সিনিয়ররা তাঁদের বক্তব্যে আরও বলেন, "জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের সন্তানসম। আমরা চাই তাঁদের দাবি মানা হোক, তবে জীবন বাজি রেখে নয়।"
সাধারণ মানুষের সমর্থন
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চে সাধারণ মানুষেরও ভিড় জমেছে। তাঁরা ডাক্তারদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। এদিকে, সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পরও এখনও সমাধানের কোনও পথ বের হয়নি, যার ফলে অনশন আরও দীর্ঘ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের এই অনশন যে শুধু ডাক্তারি জগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা প্রমাণিত হয়েছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণেও।
সরকারের প্রতি ডাক্তারদের দাবি
জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনশন মূলত সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তাঁদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে কর্মপরিবেশ উন্নত করা, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা এবং বেতন কাঠামোতে পরিবর্তন আনা। তবে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনশন রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর এক বড় আঘাত হানতে পারে, কারণ তাঁদের অনশন দীর্ঘায়িত হলে চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে কলকাতার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের এই অনশন এখন ১১৩ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যাচ্ছে। তাঁকে অবিলম্বে আইসিইউতে ভর্তি করা উচিত বলেও মনে করছেন চিকিৎসকরা। এখনও পর্যন্ত সাত জন জুনিয়র ডাক্তার অনশনে রয়েছেন এবং তাঁরা সরকারের প্রতি তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এদিকে, সিনিয়র ডাক্তারেরাও জুনিয়রদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁরা ধর্মতলায় এসে প্রতীকী অনশনে অংশ নেন, ১২ ঘণ্টা ধরে না খেয়ে থেকে জুনিয়রদের প্রতি সমর্থন জানান।