সোমবার থেকে কলকাতা জুড়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগী পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সিনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের জুনিয়র সহকর্মীদের সমর্থন জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আংশিক কর্মবিরতির প্রথম দিন পালন করেন। সিনিয়র ডাক্তারদের দুটি বড় সংগঠন—হেলথ কেয়ার প্রফেশনালস ও ফেডারেশন অফ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন—এই কর্মবিরতির ডাক দেয়। কর্মবিরতি সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। চলবে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
সূত্রের খবর, এই কর্মবিরতির ফলে বেশিরভাগ হাসপাতালের ওপিডি (আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট) পরিষেবা বন্ধ ছিল। অনেক নির্ধারিত অস্ত্রোপচার বাতিল করা হয়েছে। পিয়ারলেস হাসপাতাল, বেলভিউ ক্লিনিক এবং উডল্যান্ডস সহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর উপস্থিতি অনেক কম ছিল, এবং জরুরি পরিষেবা চালু থাকলেও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবাগুলি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গেছে, পিয়ারলেস হাসপাতালে সোমবার ৯২ জন রোগী ওপিডিতে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে গত বছর একই দিনে ২৫০ জন রোগী ছিল। সাধারণত পিয়ারলেসে দৈনিক গড় উপস্থিতি প্রায় ৮০০ জন হলেও, কর্মবিরতির কারণে রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
জানা গেছে, বেলভিউ ক্লিনিকে ৪০টি নির্ধারিত অস্ত্রোপচার বাতিল করা হয়েছে, তবে জরুরি অবস্থা বিবেচনা করে ১০টি অস্ত্রোপচার করা হয়। উডল্যান্ডস হাসপাতালেও পরিস্থিতি একই রকম ছিল, যেখানে ১৬টি অস্ত্রোপচার বাতিল এবং ৩টি ক্যাথ ল্যাব পদ্ধতি করা হয়েছে।
ওপিডি এবং অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ থাকায় বহু রোগী বিপদে পড়েছেন। অনেকেই নির্ধারিত তারিখে চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যেতে বাধ্য হচ্ছেন। পুজোর ছুটির পর সোমবার ছিল ওপিডি পরিষেবার প্রথম দিন, কিন্তু কর্মবিরতির কারণে রোগীদের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ হয়নি।
ডাক্তারদের সংগঠনগুলির দাবি, রাজ্য সরকার যেন জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি দ্রুত মেনে নেয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এক সিনিয়র ডাক্তার বলেন, “রাজ্য সরকার এখনো জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে নেয়নি। আমরা চাই অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।”
এই কর্মবিরতিতে যুক্ত ডাক্তাররা সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টোকেন অনশনে অংশ নেন। এছাড়াও, অনেক ডাক্তার পেন-ডাউন কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করেছেন। এই অবস্থায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলির জরুরি পরিষেবা সচল থাকলেও, সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ না হলে রোগীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।