মাথায় ছিল ঢেউখেলানো ঘন চুল। সেই চুলই ক্ষুর দিয়ে কামিয়ে ফেলেছেন রাসমণি পাত্র। তিনি একজন চাকরিপ্রার্থী। যে ছবি কার্যত অবাক করেছে অনেককেই। তীব্র প্রতিবাদ জানাতে একজন মহিলা নিজের মাথা মুড়িয়ে ফেলতে পারেন, অনেকেই কল্পনা করতে পারেননি। গতকাল রাতে ট্রেনে পূর্ব মেদিনীপুরের ভোগপুরের বাড়িতে ফেরার সময় 'বাংলা ডট আজতক ডট ইন'কে রাসমণি জানিয়েছেন, তাঁর ওই সিদ্ধান্তে আসতে অনেক দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছিল। বহুরাত নিজের সঙ্গে লড়াই করেছেন। তারপর মাথা মুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ঘন কালো একঢাল চুলের কী হল?
রাসমণি বলেছেন, 'ওই চুল যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য তাঁদেরই এক সহযোদ্ধা ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসকে দিয়েছি। আমি চাই ওই চুল কারও কাজে লাগুক।'
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আইনি জটিলতার পরে স্কুলশিক্ষিকার চাকরিতে যোগদান করেছেন সোমা দাস। কিন্তু সঙ্গীদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে শনিবার হাজির হয়েছিলেন রাসমণিদের ধর্না-বিক্ষোভে। তিনি বীরভূমের নলহাটির মধুরা হাইস্কুলে বাংলা শিক্ষিকার পদে যোগ দিয়েছেন। সোমা বললেন, 'আমি চাই সকলেই চাকরি পাক। তাই নিজে চাকরি পাওয়া সত্ত্বেও ধর্না মঞ্চে এসেছিলাম। রাসমণি ওর চুল আমায় দিয়েছে। আমি নিজে একজন ক্যান্সার আক্রান্ত। তাই ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদে যন্ত্রণা বুঝি। আমি একটি এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত। যারা ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদের পরচুলা বানায়। সেখানেই রাসমণির চুল দান করা হবে। আমার নিজের দু'বার চুল পড়ে গিয়েছিল। কষ্টটা বুঝি। রাসমণির চুলে শোভা বাড়বে অন্য কারও।'
রাসমণি গতরাতে জানিয়েছিলেন বললেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। চাকরির জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। অথচ চাকরি মেলেনি। তাঁর দাবি, আইনের জট কাটানোর ক্ষমতা শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তাঁর দাবি, ২০১৬ সালের এসএলএস-টির নম্বরভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সামনের সারির মেধাকে বঞ্চিত করে পিছনের সারির প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। এবং এসএমএসের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ হয়েছে।
এদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মধ্যস্থতায় ঠিক হয়েছে, সোমবার এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তাঁর দফতরের আধিকারিকেরা।