লকডাউন জীবন দুর্বিসহ করে দিয়েছে সোনাগাছির মহিলাদের। সেখানকার ৮৯ শতাংশ মহিলা ঋণে জর্জরিত। ৮১ শতাংশ মহিলা চড়া সুদে বাজার থেকে ঋণ নিয়েছেন। এমনই তথ্য উঠে এসেছে একটি সমীক্ষায়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য মার্চ মাস থেকে সেখানকার কাজ-কারবার একপ্রকার বন্ধ। এর পর শুরু হয়ে যায় লকডাউন। ফলে তাঁদের আয়ের উৎস একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯৩ শতাংশ মহিলা মেনে নিয়েছেন, এই ঋণ না মেটালে তাঁদের জীবনহানি পর্যন্ত হতে পারে। এর আগেও তাঁরা ধার নিয়েছিলেন। তবে এ বারের অবস্থা একেবারে আলাদা। তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সমীক্ষা করেছিল অ্যন্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং অর্গানাইজেশন নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানেই এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
তাদের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ৭৩ শতাংশ মহিলা সব ছেড়েছুড়ে আসতে চান। কিন্তু কিছুই করতে পারছেন না। কারণ তাঁদের চড়া সুদে ঋণ মেটাতে হবে। যা তারা নিয়েছিলেন লকডাউনের সময়। মহামারীর হাত থেকে বাঁচার জন্য তাদের ধার করতে হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল তার ৯৮ শতাংশ বলেছেন, বিকল্প জীবিকার দিকে তাঁরা যেতে চান। অন্য কোনও চাকরি বা পেশায় যুক্ত হয়ে জীবন কাটাতে চান।
যেহেতু লকডাউনের সময় তাঁদের উপার্জনের কোনও উৎস ছিল না, তাই ঋণ তাদের নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে সম্প্রতি কয়েকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আবার কাজ শুরু করেছেন। সেখানকার এক বাসিন্দা জানান, ঘর ভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে তো টাকা লাগবেই। এছাড়া তো রয়েছে ওই ঋণের টাকা মেটানো। কী করে কি হবে, বোঝা যাচ্ছে না।
ওই সংস্থার পক্ষে তপন সাহা জানান, সেখানকার মহিলারা বিশাল ঋণের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন। লকডাউন উঠে গেছে ঠিক কথা। কিন্তু তাঁরা এখনও নিজেদের কাজ শুরু করতে পারেননি। সংক্রমণ এবং তার আশঙ্কায় পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয়। প্রশাসন এগিয়ে না এলে তারা আরও বিপদে পড়বেন। তাঁর দাবি, ধার মেটানোর কাজে বিশেষ তহবিল গঠন করা হোক। তাহলে তাঁদের জ্বালা-যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমানো যাবে।