সোমবার তৃণমূলের জেলা সংগঠনে রদবদল ঘটিয়েছে নেতৃত্ব। যেখানে বিতর্কে থাকা মহুয়া মৈত্রের গুরুত্ব বেড়েছে, পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের ওপর ভরসা রাখতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে । এই নিয়ে জোর চর্চা চলছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে গুলি করে খুনের ঘটনা নিয়েও উত্তপ্ত থেকেছে এলাকা। আর এসব নিয়ে মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
জয়নগরকান্ড নিয়ে দিলীপ ঘোষ
তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েত এলাকা। পাশাপাশি, খুনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরা ফেলারও অভিযোগ উঠেছে সেখানে। এই নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষ বলেন, এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ও ধংসলীলা আজ নয়। অনেকদিন ধরেই হচ্ছে। বগটুই, বীরভূমের একাধিক জায়গা। মূলত মুসলিম সমাজকে টার্গেট করা হচ্ছে। লড়াই ওদের মধ্যে। আর সেটা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। ওদের রাজনীতির বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দুষ্কৃতিদের নেতা বানিয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তারা যা খুশি করে বেড়াচ্ছে। যারা সরকারি পার্টিতে আছে, তারা সংরক্ষণ পাচ্ছে। আর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক জিনিস বগটুইতে হয়েছিল। সরকার কোথায়? মুখ্যমন্ত্রী কোথায়?
অনুব্রতকেই আবার দায়িত্ব
তৃণমূলের জেলা সংগঠনে রদবদলের মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের ওপরেই ভরসা রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনুব্রত মণ্ডলের আসন ফাঁকা রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্য কাউকেই বীরভূমের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল না। এই নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ওই একজনই তৃণমূলের সফল জেলা সভাপতি। বাকিরা যায় আসে। ওরাই ভোট করে। ওরাই সংগঠন করে। পার্থ, বালুর বিকল্প আছে। তাহলে কি অনুব্রতর বিকল্প নেই? উনি কয়লা, বালি, পাথর,গরু, চাকরি, সব জায়গায় লুঠ করেছেন। পার্টিকে সুবিধা দিয়েছেন। তাই ওকে ঝেড়ে ফেলতে সময় লাগছে। বাকিরা দিদির নামে করে খেয়েছেন। অনুব্রত মণ্ডলের গুরুত্ব অনেক বেশি। তিনি দিদিকে বড় করেছেন।
কৃষ্ণনগরের দায়িত্বে মহুয়া
সংসদে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্ত মহুয়া মৈত্রের গুরুত্ব বেড়েছে তৃণমূলের সংগঠনে। তাঁকে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহসভাপতির মন্তব্য, উনি আগেও জেলা সভাপতি হয়েছেন। হয়তো ভাবছেন, সাংসদ পদ তো চলে যাবে। কিছু একটা দিয়ে রাখি। নাহলে হয়তো পার্টি ছেড়ে চলে যাবে।
বাবুল সুপ্রিয়র বিজেপিতে ফেরার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে
একদা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এখন রাজ্যে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী। যদিও সম্প্রতি মমতা মন্ত্রিসভায় তাঁর দায়িত্ব কমেছে। এই অবস্থায় বাবুল ফের তাঁর পুরনো দলে ফিরতে পারে কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে। যা নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, উনি কোনদিনই রাজনীতিতে সুরে গান গাননি। গান ভালো গাইলও রাজনীতিতে সবসময়ই বেসুরও থাকেন। এই ধরনের পলিটিকাল টুরিস্টরা বিচারধারা, নীতি, আদর্শ, সংগঠনের ধার ধারেন না। পার্টিও তার প্রয়োজনে নেয়, আবার ছাড়ে।
সৌমিত্র খানের মন্তব্য নিয়ে
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খানের মঞ্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গের লোকসভায় ২৩টি আসন পাওয়ার কথা বলা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, এর আগে উনি চারটে আসন পাওয়ার কথা বলেছিলেন। এক মাসে যদি চার থেকে তেইশ হয়, তাহলে বিজেপির অগ্রগতি ভালো হচ্ছে। যদি ওনার কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে করা হয়।