তার সঙ্গেই গত দু'মাসে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে দেখা গেছে তাঁকে। তবে সেই লড়াই সীমাবদ্ধ ছিল রাজনীতির গণ্ডির মধ্যেই। কখনই ব্যক্তি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেননি অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। একুশের ভোটে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হারতে হয়েছে বিজেপির হয়ে ভোটে লড়া রুদ্রকে। শোভনবাবুর জয়ের ব্যবধান ছিল ২৮,৭১৯ ভোট। সেই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ই জয়ের এক মাস হওয়ার আগেই বিধায়ক পদ থেকে শুক্রবার পদত্যাগ করলেন। আর তাতেই জল্পনা তীব্র হয়েছে নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকেই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই আবহে ভবানীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক পদ থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করলেন অভিনেতা তথা ওই কেন্দ্র থেকেই পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ।
শুক্রবার বিধায়কের ইস্তফা দেওয়ার খবর পাওয়ার পরই রুদ্রনীল বলেন, "নিজের দলেরই একজন বর্ষিয়ান বিধায়কের সঙ্গে এটা ঠিক করলেন না মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তিনি শোভনদেববাবুকে শুধুই ব্যবহার করলেন! প্রথমে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়াতেই তিনি রাজি ছিলেন না, পরে জিতে যাওয়ার পর তাঁকে এক অদ্ভুত দফতর দেওয়া হল, কারণ কৃষি দফতরের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগই ছিল না। আমার কাছে খবর আছে, কৃষি দফতর পেয়ে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। এখন আবার দু'মাস না যেতেই তিনি ইস্তফা দিয়ে দিলেন! এখন অতিমারির সময় খুব শীঘ্রই রাজ্যে উপনির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। ফলে এখন বহু মাসের জন্য ভবানীপুরের মানুষ বিধায়কহীন হয়ে পড়ল। এখন জনগণ সমস্যায় পড়লে কার কাছে দৌঁড়াবে? কোথা থেকে উন্নয়নের কাজ হবে"? প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।
প্রসঙ্গত এদিন বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেই সময়ে তাঁর পাশেই ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। যদিও মন্ত্রিত্ব থেকে তিনি পদত্যাগ দেবেন কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। পদত্যাগের বিষয়ে শোভনদেব নিজে জানান, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন তিনি। এদিকে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে শোভনদেব পদত্যাগ করতেই এই আসনে তৃণমূলনেত্রীর উপর্নিবাচনে লড়ার সম্ভাবনা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সামান্য ভোটে হেরে যান মমতা। যদিও তাঁর দল বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে। এই অবস্থায় মমতা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেনও তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যের কোনও একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে ভবানীপুর থেকে তাঁর ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে ক্রমশ জল্পনা বাড়ছে। অতীতে এই কেন্দ্র থেকেই দু'বার জি তেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে ৪৯,৯৩৬ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে বাম এবং কংগ্রেসের জোট প্রার্থী দীপা দাশমুন্সিকে ২৫,৩০১ ভোটে হারান তৃণমূলনেত্রী।