ডিএ মামলায় এর আগে দুই আদালত জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে একথা জানিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী। সেদিন সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি হয়নি। সরকারি কর্মীরা আশা করেছিলেন, মামলার দ্রুত শুনানি হবে। হয়তো পুজোর আগেই সওয়াল জবাবের সুযোগ দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তবে দেশের শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তে হতাশ রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
দুর্গাপুজোর আগে বা পরে তো নয়ই, সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি। অর্থাৎ আরও ছয়মাস পর। এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে প্রথম ওঠে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে। তারপর থেকে রাজ্য সরকারের দায়ের করা সেই এসএলপির-একবারও শুনানি হয়নি। তারিখের পর তারিখ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মী ও মামলাকারী সংগঠনগুলো।
মামলা এতদিন পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ সরকারি কর্মীদের হয়ে মামলা লড়া কর্মচারী সংগঠনগুলো। এই বিষয়ে সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'মামলা ৬ মাসের মত পিছিয়ে গেল। হতাশা বাড়বেই। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখি, ডিএ মামলার নিষ্পত্তি হতে আর কোন বাধা থাকবে না এবং রাজ্য সরকারের দায়ের করা পিটিশন খারিজ হবেই। সরকারী কর্মচারী পরিষদ আইনি লড়াই চালিয়ে তা সম্ভব করবে। শিক্ষক, কর্মচারী, পেনশনারদের ভরসা আছে আমাদের উপর।'
তবে ২০২৫ সালে মামলার পরবর্তী শুনানি হলেও যে দিন সেই মামলাটি উঠছে সেটা হল মঙ্গলবার। সুুপ্রিম কোর্টের রস্টার অনুযায়ী মঙ্গলবার নন মিসলেনিয়াস বিষয়ের শুনানি হয়। অর্থাৎ সেদিন দীর্ঘ শুনানি হওয়ার কথা। এতদিন ধরে এই দাবিটাই করে আসছিলেন মামলাকারী সংগঠনগুলো। এই বিষয়ে সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতে দেবাশিস শীল বলেন, 'মঙ্গলবার শুনানি হবে। এটা সরকারি কর্মীদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। আমাদের আইনজীবীরা বিশেষ করে পাটোয়ালিয়া সাহেব বারবার এই দাবি আদালতের কাছে রাখছিলেন। তা মান্যতা পেয়েছে। আশা করা যায় মামলা নিষ্পত্তির দিকেই এগোবে সেদিন শুনানি হওয়ায়।'
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বার ওঠে ডিএ মামলা (Dearness Allowance Hearing)। তারপর কেটে গেছে দেড় বছরেরও বেশি সময়। তবে মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি একবারও হয়নি। মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ও সরকারি কর্মচারী পরিষদের অভিযোগ, বারবার ডিএ মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠলেও শুনানি হয়নি। ফলে মামলা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতে হতাশ রাজ্যের লাখ লাখ সরকারি কর্মচারী।
সোমবার সরকারি কর্মচারী পরিষদের আইনজীবী পাটোয়ালিয়া আদালতে জানান, এসএলপি-র কোনও মেরিট নেই। সেদিন রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আদালতে জানান, এই মামলার শুনানির প্রয়োজন রয়েছে। এর আগেও তিনি দাবি করেছেন, শুনানি সম্ভব এমন দিনে যেন আদালত মামলাটির দিন ধার্য করে। তখন আইনজীবী পাটোয়ালিয়া ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, 'রাজ্য সরকার যে এসএলপি দায়ের করেছে তা ভিত্তিহীন। এই মামলার কোনও মেরিট নেই। পশ্চিমবঙ্গের লাখ লাখ সরকারি কর্মী এই মামলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তবে বারবার মামলা উঠছে আর শুনানি হচ্ছে না।'