কদিন আগে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে পুলিশি ব্যারিকেডে তাঁকে বাধা দেওয়া বলে অভিযোগ। ওই মামলায় শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছিলেন,রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে নতুন করে আবেদন করতে হবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। রাজ্যপাল অনুমতি দিলেই দেখা করতে পারবেন। সেই মতো আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা। রবিবার নির্দিষ্ট সময়ে তিনি পৌঁছে যান রাজভবনে। সঙ্গে ছিলেন ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তরা।
রবিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একগুচ্ছ দাবি পেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। আক্রান্ত ও ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সকলের সমস্যার কথা তিনি শুনেছেন, এবং নোট করেছেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর। রাজভবন থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন,'মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য যা দরকার সেটা আমি করব। এ রাজ্যে বিধায়করা আক্রান্ত। প্রতিবছর নিয়ম করে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়। আমলারা আক্রান্ত। মুখ্যমন্ত্রীর বশংবদ না হলে পদপ্রাপ্তি হয় না। বিচারব্যবস্থাও আক্রান্ত। বিচারপতির বাড়িতে পোস্টার পড়ে। মিডিয়া আক্রান্ত। সন্দেশখালির ঘটনায় রিপোর্টারকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে'।
শুভেন্দু অভিযোগ করেন,'হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরে ১,০২৫টা অভিযোগ করা হয়েছে ডিজিপি-কে। বাড়ি ভেঙেছে, লুঠ হয়েছে। ৫ হাজারের বেশি রেশন কার্ড নিয়ে নেওয়া হয়েছে। কোচবিহারে রাজবংশী-সহ সনাতনীদের বাড়ি থেকে গবাদি পশু নিয়ে চলে গিয়েছে তৃণমূলের দুর্বৃত্ত বাহিনী'।
রাজ্যপালের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য,সবার বাড়িতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দুর্গাপুজো পর্যন্ত রাখা হোক। যাঁদের যাঁদের সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিক সরকার। রাজ্যপালকে উপদ্রুত এলাকায় যেতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের সময় যেমন তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন'।
বলে রাখি, বৃহস্পতিবার ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রায় ২০০ জন আক্রান্তকে নিয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। তবে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা। শুক্রবার হাইকোর্টে তাঁর আইনজীবী জানান,রাজভবনের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও বাধা দিয়েছে পুলিশ। শুভেন্দুদের কেন বাধা দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চায় হাইকোর্ট। বিরোধী দলনেতাকে দেখা করার জন্য রাজভবনে নতুন করে আবেদন করতে হবে বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। ওই নির্দেশের পর রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুমতি চান শুভেন্দু। সেই অনুমতি মেলে।