যাদবপুরকাণ্ডে রাজ্য সরকারকে 'হিজড়া' বলে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষ। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি এভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আক্রমণ করতে একটা সম্প্রদায়কে টেনে আনায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন বিজেপির কর্মী পিঙ্কি বর্মণ। যিনি নিজে বৃহন্নলা। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন,'আমি জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছিলাম। সেটা লড়াই করার ক্ষমতা ছিল বলেই।'
উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় দিলীপ ঘোষ বলেন,'কাশ্মীর ঠান্ডা করে দিয়েছি, আর কোথায় যাদবপুর! আজ হোক বা কাল- ঠান্ডা হয়ে যাবে। এই হিজড়া সরকারের দম নাই। এরা মা বোনের ইজ্জত, ছেলেমেয়ের প্রাণ নিয়ে টানাটানি করে।' 'হিজড়া' শব্দটি কাপুরুষ অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু এই ধরনের কথা রাজ্যের বিরোধী দলের শীর্ষ নেতার মুখে কীভাবে আসতে পারে? দিলীপের সংবেদনশীলতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যে মন্তব্যের নিন্দা করেছেন বিজেপিরই বৃহন্নলা কর্মী পিঙ্কি বর্মন। তিনি বলেন,'দিলীপদার কথায় কী আর উত্তর দেব? আমরা নিন্দা জানাই। এটা ওঁর বলা ঠিক হয়নি। এটা দুঃখজনক। খুব ব্যথা লেগেছে দিলীপদার কথায়। আর হিজড়ারা পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়।'
দিলীপের বক্তব্য নিয়ে তাঁর অসন্তোষের দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন পিঙ্কি। তাঁর আক্ষেপ,সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে আমাদেরই আঘাত দিলেন দিলীপদা। আমি বেশি আঘাত পেয়ে গেলাম। সেই সঙ্গে যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তিনি ব্যথিত। পিঙ্কির কথায়,'যাদবপুরে যা হয়েছে সেটাও ঠিক হয়নি। সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। এমন যাতে আগামী দিনে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। আগামী দিনে যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়।'
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা হলে কী বলবেন? পিঙ্কির জবাব,'দিলীপদাকে বলব, আপনি যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন তা ঠিক নয়। আর হিজড়ারা লড়াই করতে জানে। শিক্ষিত সমাজ আমাদের হিজড়া, ছক্কা বলে পিছিয়ে রেখেছে। চোখে চোখ লড়ে লড়াই করতে চাই আগামী দিনে। আমরাও মানুষ। সাধারণ মানুষের মতো মেলামেশা করতে পারি। আমি জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছিলাম। সেটা লড়াই করার ক্ষমতা ছিল বলেই।'
উল্লেখ্য,সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহার জেলা পরিষদে প্রার্থী হয়েছিলেন পিঙ্কি বর্মান। ভোটে জয় আসেনি। তাঁর কাজ গোটা এলাকায় প্রশংসিত। বয়স্ক থেকে শিশুদের জন্য কাজ করেন পিঙ্কি। সামাজিক কাজকর্মে যুক্ত থাকার জন্য তাঁকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি।