নিউটাউনের এক রেস্তোরাঁর মালিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল বিধায়ক ও অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে নিউটাউনের সাপুরজির এই ঘটনাকে ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছেন বিধায়ক সোহম। এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত ক্ষমাও চেয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেজাজ হারিয়ে কারও গায়ে হাত তোলা উচিত হয়নি বলে স্বীকার করেছেন তিনি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আক্রান্ত রেস্তোরাঁ মালিক। আর এই ঘটনায় এবার মুখ খুললেন ঘাটালের অভিনেতা সাংসদ দেব। এই ঘটনাকে তিনি যে সমর্থন করেন না তা স্পষ্ট জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ দেব।
তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ঘাটাল লোকসভা জেতার পর সোমবার দিল্লিতে পা রাখেন দেহ। সেখানেই সাংবাদ মাধ্যমের সামনে দেব বলেন, ‘সোহম আমার খুব ভালো বন্ধু। তবে বন্ধু বলে আমি সবকিছু সমর্থন করতে পারি না। ঘটনাটি জানতে পেরেই সোহমের সঙ্গে ফোনে যা বলার বলেছি আমি। তবে সোহম ঠিক কাজ করেনি।’ দেব আরও বলেন, ‘সোহম একজন জনপ্রতিনিধি। আর জনপ্রতিনিধিদের সমাজের প্রতি আলাদা দায়িত্ব থাকে বলে আমার মনে হয়। তাই ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ ঘাটালের সাংসদ আরও বলেন, শুধু জন প্রতিনিধি নন, যে কোনও মানুষেরই এরকম ব্যবহার করা উচিত নয়। দেব বলেন, 'সোহম একজন জনপ্রতিনিধি। আমি ওকে বুদ্ধিমান বলে ভাবতাম। সোহম আমার খুব ভাল বন্ধু। কিন্তু বন্ধু বলে আমি সব কিছু সমর্থন করতে পারি না। এক্ষেত্রে সোহমের ক্ষমা চাওয়া উচিত। সোহমের সঙ্গে আমি কথা বলেছি, ও ঠিক কাজ করেনি।'
উল্লেখ্য, নিউটাউনের সাপুরজি এলাকার একটি রেস্তরাঁয় শুটিং চলছিল অভিনেতা তথা বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর। সেখানেই গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে রেস্তরাঁ মালিকের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। আর তারপরই বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূ বিধায়ক সোহমের বিরুদ্ধে। সোহমের অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে তাঁকে লাথি মারা হয়েছে। রেস্তোরাঁ মালিককে মারধরের ঘটনায় সোহম ইতিমধ্যে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তাতে বিশেষ একটা লাভ হয়নি। যে দুটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে তাতে চাপ আরও বেড়েছে বিধায়কেরই। এরই মধ্যে এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তায় অস্বস্তিতে পড়েছেন সোহম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা ছিল, 'মানুষের সঙ্গে আরও নম্র ও শোভন ব্যবহার করাই জয়ের দাবি। তৃণমূলের সমস্ত নেতা ও কর্মীদের বলছি, বাংলার মানুষ আমাদের উপর যে আস্থা দেখিয়েছেন, তাকে মর্যাদা দিতে হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, তাঁদের আরও দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে।' নিজের লেখায় কারও নাম বা কোনও ঘটনার উল্লেখ করেননি অভিষেক। তবে স্পষ্ট হয়ে গেছে তিনি কী উদ্দেশ্যে এই পোস্ট করেন। এবার দেবের স্পষ্ট বার্তা, 'আমি সবকিছু সমর্থন করতে পারি না। সোহমের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ও আমার ভাল বন্ধু হলেও যা করেছে ঠিক করেনি।' দেবের আরও বক্তব্য যে, জনপ্রতিনিধিদের আরও সতর্ক থাকতেই হবে।