এখন বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। মেসার্স সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে উঠেছে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। সেই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন বলে মেনে নিয়েছেন নুসরত। তিনি দাবি করেছেন, ওই সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে সুদ সমেত ফেরত দিয়েছিলেন।
নুসরতের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। বেশ কয়েক জন প্রবীণ নাগরিক অভিযোগ করেছেন, যে সংস্থায় ডিরেক্টর ছিলেন তৃণমূল সাংসদ, তারা প্রায় ২৪ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে। নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, দুর্নীতির টাকাতেই পাম অ্যাভিনিউয়ের কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনেছেন। ওই ফ্ল্যাটের দাম কত? কত টাকার ঋণ নিয়েছেন?
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময় যে নির্বাচনী হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ, সেই হিসেবে, পাম অ্যাভিনিউয়ে নুসরতের ফ্ল্যাটটি রয়েছে ২৫০০ বর্গফুট এলাকাজুড়ে। ফ্ল্যাট কেনার সময় দাম ছিল ১ কোটি ৭৬ লক্ষ ৩৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে যার বাজার মূল্য ছিল ২ কোটি টাকা। যা এখন আরও বাড়বে। নুসরতের রয়েছে দুটি গাড়ি। যার একটি বিএমডব্লু ৫ সিরিজ, দাম ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা (২০১২ সালে কেনা, গাড়ির ২০১৯ সালের মূল্য)। আর একটি গাড়ি ফোর্ড এনডেভার, দাম ২৮ লক্ষ টাকা। (২০১৬ সালে কেনা, গাড়ির ২০১৯ সালের মূল্য)। গয়নাগাটি রয়েছে ১২ লক্ষ টাকার।
২০১৯ সালের নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর ঋণ সংক্রান্ত যে তথ্য রয়েছে তাতে দুটি আর্থিক সংস্থার নাম রয়েছে- এল অ্যান্ড টি হাউসিং ফিন্যান্স লিমিটেড থেকে গৃহঋণ। গাড়ির জন্য ঋণ আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে। সেখানে সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের কোনও নাম নেই। নুসরতের সাফাই,তিনি কোনও রকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর দাবি, ওই সংস্থা থেকে ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণ তিনি ২০১৭-র ৬ মে সুদ-সহ ফেরত দিয়েছেন।
অনেকেই বলছেন, ওই ঋণের উল্লেখ ২০২৯ তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি যদি এল অ্যান্ড টি ফিন্যান্স থেকে হোম লোন নেন, তাহলে সেভেন সেন্স থেকে ঋণ নেওয়ার কী দরকার পড়ল? সব অভিযোগই সংবাদ মাধ্যমের অতিসক্রিয়তা বলে সাংবাদিক বৈঠক ছেড়েই বেরিয়ে যান নুসরত। ফলে অনেক প্রশ্নই এখনও অজানা থেকে গিয়েছে।