আরজি করে মহিলা আবাসিক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বড় ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন যে তিনিও আন্দোলনে যোগ দিতে চলেছেন। সুখেন্দুর ঘোষণা অনুযায়ী তিনি আজ (বুধবার) এই আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেবেন। সুখেন্দু বলেন, 'আমি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিতে যাচ্ছি। কারণ লক্ষ লক্ষ বাঙালি পরিবারের মতো আমারও একটি মেয়ে এবং একটি ছোট নাতনি রয়েছে। আমাদের এই বিষয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। মহিলাদের প্রতি যথেষ্ট নিষ্ঠুরতা হয়েছে।'
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “আমিও বুধবার প্রতিবাদকারীদের সাথে যোগ দিতে যাচ্ছি। কেন না লক্ষ লক্ষ বাঙালির মতো আমারও একটি কন্যা এবং ছোট নাতনি রয়েছে। আমাদের অবশ্যই এব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে। নারীর প্রতি নিষ্ঠুরতা অনেক হয়েছে। আসুন একসাথে প্রতিরোধ করি। যাই হোক না কেন।”
Tomorrow I am going to join the protesters particularly because I’ve a daughter and little granddaughter like millions of Bengali families. We must rise to the occasion. Enough of cruelty against women. Let’s resist together. Come what may.
আরও পড়ুন
— Sukhendu Sekhar Ray (@Sukhendusekhar) August 13, 2024
সুখেন্দু শেখর বলেছেন, 'যাই ঘটুক না কেন, আসুন আমরা সবাই মিলে এই ঘটনার প্রতিবাদ করি। আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। সেই মানুষগুলো কারা? এখন তদন্ত করবে সিবিআই। ভাল সিবিআই-এর প্রতি আমার আস্থা নেই। তারা বোকা। তারপরও সত্য বেরিয়ে আসতে হবে। কেন পশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? এই অপরাধের জন্য যেই দায়ী তাদের ফাঁসি হওয়া উচিত।'
উল্লেখ্য, আরজি কর (RG Kar Case) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে উত্তাল রাজ্য। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ বুধবার ১৪ আগস্ট, ‘মেয়েরা রাতের দখল নাও’ শীর্ষক অভিযানের ডাক সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন দারুণ ট্রেন্ডিং। শহর কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিতেও ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ শীর্ষক ক্যাম্পেন চলছে জোর গতিতে। কলকাতা সহ জেলায় জেলায় আজ রাতে মহিলারা জমায়েত করবেন। এটা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা দেখা বা স্লোগান শোনা যাবে না।
বুধবার রাত ১১.৫৫-তে শহর তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মহিলাদের জমায়েত হওয়ার কথা। যদিও পুরুষরাও সেই প্রতিবাদে সামিল হতেই পারেন। আসলে আরজি কর কাণ্ড সমাজের প্রতিটা মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছে। তাই সব মহলই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে এক হয়ে। এদিকে বুধবার মহিলারা যে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচি নিয়েছেন তা নিয়ে তৃণমূল সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে। কারণ, অনেক জায়গাতেই তৃণমূল নেতাদের বাড়ির লোকেরাই সেই কর্মসূচিকে সফল করতে প্রচারে নেমেছেন। সুখেন্দুই প্রথম বড় নেতা, যিনি নিজে প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সুখেন্দু শুধু রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ নন, তিনি তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকও বটে।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এমন অভিনব ক্যাম্পেন নিয়ে সিপিএমকে বিঁধেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডলে সিপিএমকে নিশানা করে কুণাল লিখেছেন, “সিপিএমের বিপ্লবীরা আগে বর্ণালী দত্ত, ডাঃ অনিতা দেওয়ান, তাপসী মালিক, ধানতলা, নন্দীগ্রামের হিসেব দিক। আর রাতের জমায়েত? রোজ রাত আর ভোরে এই বাংলায় অসংখ্য মা, বোন যাতায়াত করেন। গ্রাম থেকে স্টেশন, রেল ধরে শহর। কতরকম কাজ। দেখুন। বুঝুন। রাত জমায়েতের নাটক দরকার নেই।” এই আবহে সুখেন্দুশেখর রায়ের মতো তৃণমূলেরই এমন প্রবীণ সাংসদের ‘মেয়েদের রাত দখলের’ ক্যাম্পেনকে সমর্থন ও তাতে সামিল হওয়ার বার্তা আলাদা তাৎপর্য যোগ করল বলাই বাহুল্য।