আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সংঘটিত আন্দোলনে বরাবরই পাশে থেকেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। এই নিয়ে নিজের দল তৃণমূলকে একাধিকবার অস্বস্তিতেও ফেলেছেন তিনি। এবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হতেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেলন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।
সুখেন্দুশেখর রায় তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোষ্ট করেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনটি স্ট্যাম্প তার মধ্যে মধ্যেখানের স্ট্যাম্পটি ভেঙে গেছে। তিনি ক্যাপশানে লেখেন, ‘ মিডল স্ট্যাম্প উপড়ে গিয়েছে। এরপর কী?’
MIDDLE STAMP UPROOTED. WHAT NEXT? pic.twitter.com/buZonkQyu2
আরও পড়ুন
— Sukhendu Sekhar Ray (@Sukhendusekhar) September 2, 2024
আর জি কর ইস্যুতে প্রথম থেকেই সরব সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। মেয়েদের রাতদখলের আগে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে রাতদখলে শামিল হওয়ার কথাও বলেছিলেন। একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টও করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে স্মরণ করালেন বাস্তিল দুর্গের পতনের কথা। ওই পোস্টে লিখেছিলেন, ১৭৮৯ সালের জুলাই মাসে বিভোক্ষকারীরা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিলেন বাস্তিল দুর্গ। জন্ম হয়েছিল ফরাসি বিপ্লবের। ঘটনাচক্রে, রবিবার কলকাতায় আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করছেন খ্যাতনামী-সহ বহু মানুষ। সেই মিছিল শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে সুখেন্দুশেখরের এই পোস্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন অনেক রাজনৈতির বিশেষজ্ঞই। অনেকেই মনে করছেন, আরজি কর-কাণ্ডে আবার তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।
এদিকে, সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তিনি লিখেছেন, ‘সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার নিয়ে যাঁরা প্রতিক্রিয়া চাইছেন তদন্ত সিবিআই করছে। সম্ভবত দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বিষয়টি সন্দীপ ও তাঁর আইনজীবীরা বলতে পারবেন। দলের কোনও বক্তব্য নেই।’ সেই সঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘কিছু অভিযোগ অনেক আগেই শোনা গিয়েছিল। তখন পদক্ষেপ নিলে এখনকার অস্বস্তি এড়াতে পারত স্বাস্থ্যভবন।’ সোমবার সন্দীপ গ্রেফতার হওয়ার পরে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার নিয়ে যাঁরা প্রতিক্রিয়া চাইছেন-
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) September 2, 2024
তদন্ত CBI করছে। সম্ভবত দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। এবিষয়টা সন্দীপ বা তাঁর আইনজীবীরা বলতে পারবেন। দলের কোনও বক্তব্য নেই। কিছু অভিযোগ অনেক আগেই শোনা গিয়েছিল। তখন পদক্ষেপ নিলে এখনকার অস্বস্তি এড়াতে পারত স্বাস্থ্যভবন।
মূলত দুর্নীতির অভিযোগেই গ্রেফতার হয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তিনি আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ থাকাকালীনই প্রায় এক বছর আগে ওই হাসপাতালের ডেপুটি সুপার আখতার আলি প্রথম হাসপাতাল জুড়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন। সে অভিযোগ স্বাস্থ্যভবন এবং রাজ্য ভিজিলেন্স কমিশনে জমাও পড়েছিল। আরজি করে তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে নতুন করে হাসপাতালের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তখন সেই আখতার আলি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে তাঁর করা পুরোনো অভিযোগকে নতুন করে মেলে ধরেন। তার ভিত্তিতে আদালত সিবিআইকে আলাদা করে দুর্নীতির মামলা দায়ের করে তদন্ত করতে বলে। সেই মামলাতেই গ্রেফতার হয়েছেন সন্দীপ ঘোষ।