Advantages of Running Trams in Kolkata: শহরে ট্রামের চলা নিয়ে বারবার আপত্তি তুলেছে কলকাতা পুলিশ। সম্প্রতি ট্রাম বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলাও করা হয়। ধীর গতির ট্রামের জন্য শহরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়তে হয় বলে দাবি কলকাতা পুলিশের। মূলত এই সমস্যার অজুহাতেই কলকাতার ৩০ রুটের মধ্যে ২৭টি রুটেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ট্রাম। কিন্তু বাস্তবে এ শহরের যানবাহনের গড় গতিবেগের চেয়ে ৩ গুণ জোরে ছুটতে পারে ট্রাম! জানতেন?
ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন (CTUA)-এর সাধারণ সম্পাদক টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে একটি সাক্ষাৎকারে জানেন না, যে অধিকাংশ রুটেই ট্রাম বন্ধ হওয়ার পরেও কলকাতার ট্রাফিক ব্যবস্থায় এ শহরের যানবাহনের গড় গতিবেগ মাত্র ১০-১২ কিলোমিটার। যেখানে ট্রাম ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। অর্থাৎ, কলকাতার যানবাহনের গড় গতিবেগের চেয়ে অন্তত তিন গুণ জোরে ছুটতে পারে ট্রাম! অথচ, গতির যুক্তিতেই এ শহরের ২৭টি রুটে ট্রাম চলাচলে আপত্তি জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
CTUA-এর একজন অন্যতম সদস্য সাগ্নিক গুপ্ত বলেন, “কলকাতার ট্রাফিক ব্যবস্থায় ট্রামকে কোণঠাসা করার পরেও শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার গতি, শহরের যানবাহনের গড় গতিবেগ কি বাড়াতে পেরেছে পুলিশ? আসলে সমস্যা ট্রামের গতিতে নয়, গলদ রয়েছে শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার পরিকল্পনায়।”
সাগ্নিক জানান, একটা ইলেকট্রিক বাসের দামে অন্তত ৯-১০টা পরিবেশবান্ধব ট্রাম তৈরি করা যায়। একটা ইলেকট্রিক বাসের ব্যাটারির দামেই অন্তত ৩-৪টে ট্রাম তৈরি করা যায়। একটা ইলেকট্রিক বাসের আয়ু বড়জোড় ১০ বছর, যেখানে একটা ট্রাম সামান্য রক্ষণাবেক্ষণ খরচেই অন্তত ৪০-৫০ বছর চলতে পারে। তাঁর অভিযোগ, “এই সব তথ্য রাজ্য সরকারেরও জানা আছে নিশ্চয়ই। তা সত্ত্বেও কালীঘাট, রাজাবাজার, বেলগাছিয়া, খিদিরপুরে ১০০টিরও বেশি ট্রাম পড়ে রয়েছে। বেলগাছিয়াতে ১৯৮২ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ৩২টি স্টিল এবং ফাইবার বডির ট্রাম ২০১৮ সাল থেকে পড়ে রয়েছে৷ এর পরেও শহরের রাস্তা থেকে ক্রমশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ট্রামের চলা। তাই শুধু পুলিশের আপত্তি নয়, সরকার পক্ষেরও ট্রাম বাঁচানোর ক্ষেত্রে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক!”