শেষমেশ বিদায় নিচ্ছে সে। হারিয়ে যাচ্ছে শহরের রাস্তা থেকে। আজ তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। তাই সে শহরের বোঝা। যেকারণে কলকাতায় আর চলবে না ট্রাম। দেড় শতক ধরে শহরের নস্টালজিয়া বহন করে, বহু মানুষের যাত্রাপথের বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিল এই পরিবেশবান্ধব যান।
কলকাতায় ট্রামের ঐতিহ্যবাহী সংযোগ শুধুমাত্র ময়দান এবং এসপ্ল্যানেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাসিস চক্রবর্তী। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, শহরের ট্রাম রুটগুলির বেশিরভাগই বাতিল করা হবে, শুধুমাত্র ঐতিহ্যবাহী রুটটি পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য চালু থাকবে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য সরকার একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে যা, ঐতিহ্যবাহী ট্রাম সংরক্ষণ করবে। পরিবহন বিভাগ এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করছে, যা আদালতে জমা দেওয়া হবে। মন্ত্রী স্নেহাসিস চক্রবর্তী বলেন, "আমরা এসপ্ল্যানেড ও ময়দানের মধ্যে একটি বিশেষ ট্রাম গাড়ি চালাবো, যা শহরে আসা পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় যাত্রা হবে। তবে বাকি রুটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
২০১৫ সালে কলকাতায় ২৫টি ট্রাম রুট ছিল, কিন্তু এখন মাত্র তিনটি রুটে পরিষেবা সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। পরিবহন দফতরের সূত্র অনুযায়ী, অনেক রুটে কাঠামোগত সমস্যার কারণে এবং মেট্রোর কাজের জন্য ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর থেকে এসপ্ল্যানেড-খিদিরপুর রুটও বন্ধ রয়েছে।
পরিবহণ মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, কলকাতার জনসংখ্যা এবং যানবাহনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও, শহরের রাস্তার পরিমাণ কোনও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পায়নি। কলকাতার রাস্তার মাত্র ৬ শতাংশ জায়গা গাড়ির জন্য উপলব্ধ, যা মুম্বই ও দিল্লির তুলনায় অনেক কম। এই কারণেই ট্রাম পরিষেবা সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও জানান, বাংলায় এক লাখেরও বেশি ইলেকট্রিক যানবাহন ইতিমধ্যেই নিবন্ধিত হয়েছে, যা কার্বন কমাতে সাহায্য করছে। তবে ট্রামগুলিকে শুধুমাত্র অ-দূষণকারী বলে তাদের পুনরুজ্জীবিত করার কোনও বৈধ যুক্তি হতে পারে না।