বুধবার অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর কলকাতায় বিরাট সমাবেশের আয়োজন করেছে রাজ্য বিজেপি। সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। এই সভার আয়োজন নিয়েই এখন সরগরম রাজ্য বিজেপি। ধর্মতলা চত্বরে এই সভা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই মঞ্চ করছে গেরুয়া শিবির। শোনা যাচ্ছে, ধর্মতলার মঞ্চ তৈরিতে তৃণমূলের সঙ্গে টক্করে নামছে বঙ্গ বিজেপি। বিশাল বড় মঞ্চে থাকবেন নেতারা। থাকবেন শহিদ পরিবারের সদস্যরাও। জানা গিয়েছে, ধর্মতলায় ৬০ ফুট লম্বা মঞ্চ করছে বিজেপি৷ ২০ ফুট চওড়া হবে সেই মঞ্চ। উচ্চতাতেও যথেষ্ট বড় হচ্ছে সেটি। সেখানে বসবেন অমিত শাহ সহ অন্যান্য নেতারা।
সূত্রের খবর, প্রথম স্তরে বসবেন অমিত শাহ এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মঞ্চের দ্বিতীয় স্তরে বসবেন বিজেপির রাজ্য স্তরের অন্যান্য নেতারা। তৃতীয় মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প থেকে বঞ্চিতদের জন্য। মঞ্চের সামনে ৩৫ ফুট জায়গা থাকবে ডি জোন। ত্রিস্তরীয় মঞ্চে শাহের ডান ও বাম হাতে থাকছেন সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী। ধাপে ধাপে বসার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে রাজ্যের অন্যান্য নেতৃত্ব ও বঞ্চিত সাধারণের জন্য। লোহার পিলার দিয়ে তৈরি হচ্ছে মঞ্চের কাঠামো, একটি বড় মঞ্চকেই ভাগ করা হচ্ছে ৩ টি ভাগে। মঞ্চের প্রত্যেকটি স্তর চওড়ায় হবে ১৬ ফুট করে। মূল মঞ্চ এবং ডি জোন এর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে অমিত শাহের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী। আশপাশের বাড়িগুলির ছাদ থেকে চলবে নজরদারি। রাজ্য সরকারের জন্য যাঁরা কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি, তাঁদের অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার জন্য, অমিত শাহর সভামঞ্চে রাখা হচ্ছে ড্রপবক্স।
জানা যাচ্ছে রাজ্য বিজেপির সভায় যোগ দিত বুধবার দুপুরেই কলকাতায় নামবেন অমিত শাহ। তার পর সভা সেরে তিনি আবার দিল্লি উড়ে যাবেন বিকেলের বিমানে। দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দিল্লির ৬এ কৃষ্ণ মেনন মার্গ থেকে বেরোনোর কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এর পর বেলা ১১টা নাগাদ বায়ুসেনার বিমান চড়বেন তিনি। সেই বিমানেই দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা তাঁর। যাত্রাপথেই মধ্যাহ্নভোজ সারবেন তিনি। কলকাতায় নেমে কপ্টারে করে অমিত শাহ যাবেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে পৌনে ২টো নাগাদ ধর্মতলার সভামঞ্চে পৌঁছনোর কথা শাহের। সভা শেষে সাড়ে ৩টে নাগাদ তিনি আবার রেসকোর্স থেকে কপ্টারে করে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। সেখানে বায়ুসেনার বিমানে করেই পৌনে ৪টে নাগাদ দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে,কালকে বেলা ১২টা থেকে সভা শুরু হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিবর্তে হবে রাজনৈতিক নাটক। তৃণমূলকে আক্রমণ করে গান গাইবেন দলের কবিয়াল বিধায়ক অসীম সরকার। ব্যঙ্গ কবিতা আবৃত্তি করবেন অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসা রুদ্রনীল ঘোষ। রাজ্য নেতাদের বক্তৃতা শেষে দুপুর আড়াইটে নাগাদ বক্তব্য রাখবেন অমিত শাহ।
প্রতি বছর ধর্মতলায় শহিদ সমাবেশ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই মঞ্চ করছে গেরুয়া শিবির। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল ও ডিভিশন বেঞ্চে লড়াই করে সভা করার অনুমতি পেয়েছে বিজেপি৷ সমাবেশের দিন তৃণমূলের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হলেও দূর দূরান্ত থেকে কর্মী, সমর্থকদের কলকাতায় আনতে সর্বোচ্চ তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপির। উত্তরবঙ্গের কর্মীদের আনার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে একাধিক ট্রেনের। কলকাতাতে অমিত শাহের সভাতে যোগ দিতে মালদা থেকে বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থেকেও মঙ্গলবার স্পেশাল ট্রেন ছাড়া হবে।