আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাইলেন বলাগড়ের তৃণমূলের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মনোরঞ্জনের দাবি, দিদিকে দিল্লি পাঠাবেন। প্রধানমন্ত্রী বানাবেন।
আজ অর্থাত্ ২১ ফেব্রুয়ারি। প্রতিবছরের মতো এবারও ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ উপস্থিত কবি জয় গোস্বামী, সঙ্গীতশিল্পী মনোময় ভট্টাচার্য, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, মনোরঞ্জন ব্যাপারী সহ নানা বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সেই অনুষ্ঠানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইলেন মনোরঞ্জন।
এদিন মনোরঞ্জন মঞ্চে উঠে বলেন, 'দিদি, আপনি বাংলায় দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি গঠন করেছেন। ভারতের আর কোথাও নেই। বাংলার দলিত, রিফিউজি, শরণার্থী মানুষ আপনাকে দেখে বুকে বল পায়।' এরপরেই বিজেপি-কে নিশানা করে মনোরঞ্জন বলেন, 'আমরা যারা একদা ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় আসতে বাধ্য হয়েছিলাম, এই বাংলায় আমাদের কাছে আজ নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে। সেই বিপদের সময়ে কাগজপত্র কী করে জোগাড় করে আনবো। যখন আমাদের খাওয়া, থাকার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। কোথাকার কাগজ, কোথায় গুছিয়ে রাখবো।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়ে তাঁর মন্তব্য, 'গোবলয়ের নেতারা বহু দিন ধরে বাংলাকে দুর্বল ও অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। বাংলাকে টুকরো করতে চাইছে। আমাদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরির জন্য অজস্র মানুষের আধার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। দিদি আপনি আমাদের শক্তি। আপনি আছেন, আমাদের সঙ্গে। ওরা বলছে, আধা রোটি খায়েঙ্গে, মোদীজি কো লায়েঙ্গে। আমরা বলছি, ভুখা পেট রহেঙ্গে, দিদি কো দিল্লি ভোজেঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী বনায়েঙ্গে।'
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে সরকারি ভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই আন্দোলনে চার ছাত্র নিহত হন। ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে, রাষ্ট্রঙ্ঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (UNESCO) সাধারণ সম্মেলন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে, যা পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ স্বাগত জানিয়েছিল। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের সম্মানে এবং শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং যোগাযোগের জন্য মাতৃভাষার গুরুত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। সেই থেকে প্রতিবছর সারা বিশ্বে নানা কর্মকাণ্ড ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।