স্নানের জন্য বহুযুগ ধরেই সবাই সাবানকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। যদিও হালফিলের যুগে বাজারে বিভিন্ন সুগন্ধের বডি ওয়াশের ছড়াছড়ি। এই বডি ওয়াশ এখন যতটা জনপ্রিয় হয়েছে এটার চল আগে কখনও হয়নি। মানুষ ভরসা রাখত সাবানের ওপরই। সেই অভ্যেসটা অনেকেই ভেঙে বেরোতে পারেন না৷ আবার বহু মানুষ আছেন, ইচ্ছে থাকলেও যাঁরা বডি ওয়াশের উপর ভরসা করতে পারেন না৷ প্রচলিত ধারণা রয়েছে, বডি ওয়াশ লাগানোর পর, তা ধুয়ে ফেলতে বেশ সময় লাগে৷ আর জলেরও বেশ অপচয় হয়৷ আদৌ কি এই ধারণা ঠিক? জেনে নেওয়া যাক, বডি ওয়াশনা সাবান- কোনটা বেশি সাশ্রয়ী এবং উপকারী।
দাম
অনেকের ধারণা রয়েছে যে সাবানের তুলনায় বডি ওয়াশের দাম বেশি। যদিও প্রথমে এটাই মনে হওয়ার কথা। তবে সাবানের চেয়ে বডি ওয়াশ অনেক বেশিদিন চলে। এখন বাজারেও সস্তায় অনেক কম দামে বডি ওয়াশ পাওয়া যায়। আর স্নানের জন্য বডি ওয়াশ বেশি পরিমাণে লাগে না৷ কয়েনের মতো এক ফোঁটা স্নানের জন্য যথেষ্ট৷ তাই মূল্যের নিরিখে বিচার করতে গেলে বডি ওয়াশই ভাল।
সময়
বডি ওয়াশের বিষয়ে একটি প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ রয়েছে সেটা হল-স্নানের সময় বডি ওয়াশ জল দিয়ে ধুতে সাবানের তুলনায় বেশ সময় লাগে। তাই অফিস বা বাইরে বেরোতে দেরি হওয়ার ভয়ে অনেকেই বডি ওয়াশ এড়িয়ে চলেন। এটা কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। কারণ বডি ওয়াশ জল দিয়ে সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়৷ আর আমাদের ত্বককে এটা হাইড্রেট করে৷ সঙ্গে ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও সাহায্য করে।
ত্বকের জন্য উপকারী বডি ওয়াশ
বডি ওয়াশে রয়েছে একাধিক ত্বক-উপযোগী উপাদান যেমন অপরিহার্য তেল, গ্লিসারিন, ফুলের নির্যাস এবং আরও অনেক কিছু, যা শুধু আপনার ত্বক পরিষ্কারই করে না, ব্যবহারের পরে আপনার ত্বককে করে কোমল আর মসৃণ ৷ তবে সাবান কিন্তু বডি ওয়াশের মতো স্বাস্থ্যসম্মত নয় ৷ কারণ, একটা আশঙ্কা তো রয়েই যায় যে আপনার আগে হয়তো কেউ একই সাবান ব্যবহার করেছেন ৷ তবুও বডি ওয়াশকে বিজয়ী ঘোষণা করার আগে আপনার একটি কথা জানা দরকার৷ বডি ওয়াশও ব্যবহার করা হয় ওয়াশ ক্লথ আর লুফার সাহায্যে, যাতে সহজেই রোগজীবাণু আর ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে ৷
বডি স্ক্রাবিং
কেউ কেউ বলবেন এক্সফোলিয়েশন আর ময়শ্চারাইজ়িংয়ের ক্ষেত্রে বডি ওয়াশ বেশি ভালো কাজ করে৷ কিন্তু সত্যিই কি এ কথা ঠিক? আজকাল সাবানেও গ্র্যানিউলের মতো উপাদান ব্যবহার করা হয় এবং তাই সেগুলো বডি ওয়াশের মতোই চমৎকারভাবে এক্সফোলিয়েশনের কাজ করতে পারে ৷ এমনকী ময়শ্চারাইজেশনের ক্ষেত্রেও সাবানে এখন অ্যালোভেরা জেল, শিয়া বাটারের মতো বেশ কিছু উপাদান ব্যবহার করা হয়, যেগুলি ত্বকের পক্ষে জরুরি পুষ্টি -উপাদানে ভরপুর ৷ এগুলি দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে ৷ তাই দুটোই ত্বকের জন্য ভাল। তাও বলা হয় যে সাবানে ক্ষারজাতীয় উপাদান থাকায় তা একেবারেই ভাল নয়, ত্বককে রুক্ষ করে দেয়।
বডি ওয়াশ নাকি সাবান
তাই বলা চলে সাবানের চেয়ে বডি ওয়াশ অনেক বেশি ভাল। এটা সাশ্রয়কর এবং ত্বককে জেল্লাদার ও কোমল রাখতে বডি ওয়াশের জুড়ি মেলা ভার। তাই নিজের পছন্দ অনুযায়ী বডি ওয়াশ বাজার থেকে কিনে ব্যবহার করুন।