সানডে হো ইয়া মানডে, রোজ খাও অন্ডে...। নয়ের দশকে দারুণ জনপ্রিয় ছিল এই ট্যাগলাইন। আগে চিকিৎসকরাই ডিম খাওযার ঢালাও পরামর্শ দিতেন। তবে ইদানিং কিন্তু তেমনটা শোনা যায় না। যাঁরা ডায়েট করছেন বা শরীর সচেতন, তাঁরা ডিম খেলেও তার সাদা অংশটি বেছে খান। কুসুম নৈব নৈব চ। অনেকেরই ধারণা আছে, কুসুম খাওয়া মানেই হৃদয়ের জটিলতা ডেকে আনা। কোলেস্টেরল তার অন্যতম কারণ। সত্যিই কি এমন ধারণার কোনও ভিত্তি আছে?
অনেকেই জানবেন কোলেস্টেরল ২ ধরণের হয়। একটি ভালো, অন্যটি খারাপ। শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করে খারাপ কোলেস্টেরল। ডিমের কুসুমে ২ ধরনের কোলেস্টেরলই বিদ্যমান। কিন্তু অনেকেই এটা জানেন না যে খারাপ কোলেস্টেরলের তুলনায় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। কুসুম না খাওয়া মানে, চোর ঠেকাতে গিয়ে আপনি পুলিশকেও ঠেকিয়ে ফেলছেন। আদৌ কি এর কোনও প্রয়োজন রয়েছে? দেখুন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কতটা উপকারি ডিম?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন B, ভিটামিন A, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক এবং অন্যান্য উপকারি পুষ্টি রয়েছে। এর চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকারক মাখন-ঘি বা বনস্পতি দিয়ে রান্না করা খাবার। সাম্প্রতিক গবেষণা বলেছে, প্রতিদিন ডিম খেলে অনেক ধরণের স্ট্রোককে রোধ করা সম্ভব।
এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের মতে, ডিম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ক্ষতিকারক নয়। মূলত প্রোটিন এবং ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস হিসাবে ডিম সারা বিশ্বে সমাদৃত। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, যাঁদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ডায়েটে ডিমকে রাখুন। না হলে যে কোনও বয়সি মানুষের গোটা ডিম খেতে কোনও বাধা নেই।
কটা খাওয়া যেতে পারে?
দিনে ক'টা ডিম খাওয়া যেতে পারে, এমন প্রশ্ন খুবই সঙ্গত। সকল ডিম-প্রেমীর মনে এ প্রশ্ন আসে। নিউট্রিশনিস্টদের মতে, একদিনে কখনও বেশি সংখ্যক ডিম খাওয়া ভালো নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে একটি এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে ২টো করে ডিম খেলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী ডায়েট চার্ট না বানিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন আর নিশঅচিন্তে হ্যাঁ বলুন ডিমের সবচেয়ে লোভনীয় অংশ কুসুমকে।