বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। সেই সঙ্গে ত্বকেও পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। একই সময়ে, প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জনকে ৪০ বছর বয়সে পৌঁছে টাকের সমস্যায় পড়তে হয়। বার্ধক্যের সঙ্গে পুরুষদের চুল খুব দ্রুত পড়া শুরু হয় এবং তা ক্রমে সম্পূর্ণ টাক হয়ে যায়।
বয়স বাড়লে চুল পড়া খুবই সাধারণ। কিন্তু অল্প বয়সে চুল পড়লে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি আপনার হারানো চুল ফিরে পেতে পারেন। এর জন্য আপনার খাদ্যাভ্যাসের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া এবং খাদ্যতালিকায় সঠিক জিনিস অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। তাই যদি আপনার চুল পুরোপুরি পড়ে যায় এবং আপনি সেগুলি আবার পেতে চান, তাহলে এর জন্য আপনাকে কী করতে হবে তা জানুন।
কী চুলের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে?
* অনেক কিছু আছে যা চুলের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে- পারিবারিক ইতিহাস বা চুল পড়ার জিন।
* হরমোনের পরিবর্তন
* পুষ্টির ঘাটতি
* কেমোথেরাপি বা ওষুধ
* মানসিক চাপ
* দ্রুত ওজন হ্রাস
* ট্রমা যা, ফলিকলগুলিকে ক্ষতি করে
* কিছু গুরুতর রোগ
কীভাবে সমস্যা সমাধান সম্ভব?
* ডায়েটে প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন- চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। চুলের ফলিকল, প্রোটিন দিয়ে তৈরি। খাবারে খুব কম পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে চুল পড়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে ডিম, স্যালমন জাতীয় মাছ এবং কম চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া উচিত। যাতে সঠিক পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে আপনি আপনার হারানো চুল ফিরে পেতে পারেন।
* সঠিক ভিটামিন নিন- আপনার খাদ্যতালিকায় সঠিক ভিটামিন অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ মাথার ত্বকে সিবামের স্বাস্থ্যকর মাত্রার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় এবং ভিটামিন ই আপনার মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালনকে উৎসাহিত করে।
* এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি করতে পারেন- কখনও কখনও ঘরোয়া প্রতিকার খুব উপকারী হতে পারে। আপনার বাড়িতে এমন অনেক জিনিস থাকে যা, এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। আপনি যদি টাকের সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং চুল ফিরে পেতে চান, তাহলে রসুন আপনার জন্য খুবই উপকারী হবে। রসুন, আদা ও পেঁয়াজের ঘন পেস্ট দিয়ে আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন। এটি সারা রাত আপনার মাথার ত্বকে রেখে পরের দিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। এই ঘরোয়া প্রতিকার টানা কয়েক সপ্তাহ করলে আপনার চুল আবার গজাতে শুরু করবে।
* প্রতিদিন মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন- চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে এবং সেগুলি ফিরে পেতে নিয়মিত আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে আপনার মাথায় ভাল রক্ত সঞ্চালন হবে। এতে আপনি কেবল অনেক স্বস্তি পাবেন তা না, বরং চুল মজবুত হবে।
* ডায়েটে বায়োটিন অন্তর্ভুক্ত করুন - বায়োটিন বা ভিটামিন বি ৭ আপনার চুলে কেরাটিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং ফলিকল বৃদ্ধির হার বাড়াতে পারে। যদিও বায়োটিন চুল পড়া কমায় এমন কোন দৃঢ় প্রমাণ নেই, তবে এটি চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে। ডিম, বাদাম, পেঁয়াজ, মিষ্টি আলু এবং ওটসে বায়োটিন বেশি থাকে।
* এই ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন- বাজারে অনেক ধরনের শ্যাম্পু পাওয়া যায় যেগুলি আপনার চুলকে স্বাস্থ্যকর, ঝলমলে করে। শ্যাম্পুতে অনেক ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে যা, আপনার চুলের বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর। শ্যাম্পু কেনার সময় আপনার এটির উপাদানগুলি সাবধানে পড়া গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, ফল এবং বীজের তেল যেমন জোজোবা, নারকেল, জলপাই, প্রোটিন, অ্যালোভেরা, ক্যাফেইন ইত্যাদির মতো জিনিসযুক্ত শ্যাম্পু নিন।
* পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি- আপনি যখন ঘুমান তখন আপনার শরীরের মেরামতের কাজ হয়। ঘুমের সময়, গ্রোথ হরমোন কোষের উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে যা, চুলের বৃদ্ধির স্বাস্থ্যকর হার বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমনো জরুরি।