গোটা বিশ্বেই হার্টের সমস্যা ঊর্ধ্বমুখী। হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অল্প বয়সের নারী-পুরুষের মধ্যেও হার্ট সংক্রান্ত বিবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি একটি গবেষণা হয়েছে, যে মহিলারা সন্তান ধারণ করতে অক্ষম তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি। ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের (এমজিএইচ) এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির জার্নালে।
ম্যাসাচুসেটস জেনারেলের হাসপাতালের গবেষণা অনুযায়ী, যে সব মহিলা বন্ধ্যা বা সন্তান ধারণ করতে অক্ষম (বন্ধ্যাত্ব) তাঁদের হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ঝুঁকি ১৬ শতাংশ বেশি। ম্যাসাচুসেটসের জেনারেল হাসপাতালের মেনোপজ, হরমোন এবং কার্ডিওভাসকুলার ক্লিনিকের অধিকর্তা এমিলি লাউ বলেন,'যে মহিলাদের সন্তান হয় না তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। মেনোপজের সমস্যা থাকলেও এটা দেখা গিয়েছে।'
দু'ভাবে হার্ট বিকল
গবেষণায় বলা হয়েছে, দু'ভাবে হার্ট বিকল হতে পারে- প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন (HFpEF) থেকে হার্ট ফেইলিওর এবং রিডুয়সড ইজেকশন ফ্র্যাকশন (HFrEF) হার্ট ফেইলিওর। প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন হৃৎপিণ্ডের পেশীগুলি অচল করে দেয়। সেগুলি কাজ করতে অক্ষম হয়ে ওঠে। রিডুয়সড ইজেকশন ফ্র্যাকশনে হৃৎপিণ্ডের বাম দিকে ভেন্ট্রিকলে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল করতে পারে না।
বন্ধ্যাত্ব এবং সামগ্রিক হৃদযন্ত্রের সক্ষমতার মধ্যে যোগসূত্র পেয়েছেন গবেষকরা। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মহিলার হৃদযন্ত্রের বিকল হওয়ার মূল কারণ প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন। এই গবেষণায় ৩৮,৫২৮ জন ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে ১৪ শতাংশ মহিলার বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। ১৫ বছর পর্যবেক্ষণে রাখার পর গবেষকরা সিদ্ধান্তে আসেন, বন্ধ্যাত্ব সামগ্রিক হৃদযন্ত্রের বিকলের ঝুঁকি ১৬ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। বন্ধ্যাত্ব থাকা মহিলাদের প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি ২৭ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
পুরুষ ও মহিলাদের হার্ট ফেইলিওরের প্রধান কারণ
এমিলি লাউয়ের মতে,'এটা বেশ কঠিন ব্যাপার। প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন কীভাবে তৈরি হয় সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। আমাদের প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশনের চিকিৎসার সুযোগ তেমন নেই। সাম্প্রতিক সময়ে পুরুষ ও মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে রয়েছে পেশী স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। তবে মহিলাদের ঝুঁকি বেশি।'এমিলি লাউ আরও বলেন,'আমরা বুঝতে পারছি না কেন মহিলাদের মধ্যে প্রিজার্ভ ইজেকশন ফ্র্যাকশন বেশি দেখা যায়। একজন মহিলার শুরুর দিকে প্রজনন ক্ষমতা সম্পর্কে জানলে এব্যাপারে খানিকটা আলোকপাত হতে পারে। ২০-৪০ বছরের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব দেখা যায়। যদি কোনও মহিলার আগে থেকে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থাকে তবে তার চিকিৎসা নেই। তবে হার্ট ফেইলিওরের মোকাবিলায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কমানো, ধূমপান ত্যাগ ইত্যাদি করা উচিত।
আরও পড়ুন- হার্ট সুস্থ রাখতে দিনে ক'কাপ কফি খাবেন? কারা ছোঁবেনই না?