পশ্চিমবঙ্গে চলছে তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা আরও বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে অস্বস্তিকর আবহাওয়ার সতর্কতা রয়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া যেন কঠিন হয়ে পড়েছে। গ্রীষ্মের দাবদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন অনেকেই। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে, সেই মুহূর্তে কী করবেন?
খুব গরম জায়গায় বা সরাসরি সূর্যের আলোর নীচে বেশিক্ষণ থাকলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। কেউ হঠাৎ ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে গরম জায়গায় চলে গেলে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। গরম আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ব্যায়ামও হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ। পর্যাপ্ত জল পান না করার কারণে গরমে অতিরিক্ত ঘাম হয়। কেউ যদি খুব বেশি অ্যালকোহল পান করে, তবে শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এটিও হিট স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। আপনি যদি গ্রীষ্মকালে এমন পোশাক পরেন যা ঘাম হতে দেয় না এবং বাতাস প্রবেশ না করতে পারেন, তাহলে তা হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে।
কেউ যদি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং সময় মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার মধ্যে অরগ্যান ফেলিওর, মৃত্যু, ব্রেন ডেড রয়েছে। যদি কেউ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন, তাহলে কোন প্রাথমিক পদ্ধতি নেবেন, রইল টিপস।
* সানস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদে রাখবেন না।
* কাপড়ের পুরু স্তরগুলি সরান এবং বাতাস প্রবেশ করতে দিন।
* শরীর ঠাণ্ডা করার জন্য কুলার বা ফ্যানের বসুন।
* ঠাণ্ডা জল দিয়ে স্নান করুন।
* ঠাণ্ডা জল দিয়ে একটি কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন
* মাথায় ঠাণ্ডা জল দিয়ে ভেজা বরফের প্যাক বা কাপড় রাখুন।
* মাথা, ঘাড়, বগল ও কোমরে ঠাণ্ডা জলে ভিজিয়ে রাখা তোয়ালে রাখুন।
* এই প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও যদি শরীরের তাপমাত্রা না কমে, তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
হিটস্ট্রোক কী?
হিট স্ট্রোককে সাধারণ ভাষায় সানস্ট্রোক বলা হয়। শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোকের ক্ষেত্রে, শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কমাতে অক্ষম হয়। যখন কেউ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের ঘামের প্রক্রিয়াটিও ব্যর্থ হয় এবং ব্যক্তির ঘাম হয় না। হিট স্ট্রোক হলে, তাহলে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা ১০৬° ফারেনহাইট বা তার বেশি পৌঁছাতে পারে। যদি সময় মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে সেই ব্যক্তির মৃত্যু বা অরগ্যান ফেলিওরের কারণ হতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন হিটস্ট্রোক হয়েছে?
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ বোঝা খুব জরুরি। কারণ সময়মতো চিকিৎসা করা যেতে পারে সেক্ষেত্রে। মাথা ব্যথা, মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, সচেতনতা হারানো, গা বমি ভাব এবং বমি, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, বর্ধিত হৃদস্পন্দন, ত্বক শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ বুঝলে, অবশ্যই সাবধান হন।