রাত পোহালেই রথযাত্রা। ৯ দিনের এই উৎসবে, ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই ভগবান বলভদ্র ও বোন সুভদ্রা জগন্নাথ মন্দির থেকে বিরাট বড় কাঠের রথে চড়ে গুণ্ডিচা মন্দিরে যান, যেখানে তাঁরা ৯ দিন ধরে থাকবেন। এটি শুধু উৎসব নয়, বরং একটি ভারতের সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতির মেলবন্ধন। এইদিন জগন্নাথ দেবের শত শত ভক্তেরা ভগবানের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য রথের দড়ি ধরে টানেন। নিয়মিত পুজোর পাশাপাশি এই তিন ভগবানকে ৫৬ ধরনের ভোগ দেওয়া হয়, যা ছাপান্ন ভোগ নামে পরিচিত। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেরকমই কিছু ঐতিহ্যগত জনপ্রিয় খাবার, যা ভক্তদের এই সময় দেওয়া হয়ে থাকে। রথযাত্রার সময় অবশ্যই এই খাবারগুলি একবার খেয়ে দেখতে পারেন।
খেচেড়ি বা খিচুড়ি
সকলের পরিচিত খিচুড়িকে ওড়িশাতে বলা হয় খেচেড়ি। ডাল ও চালের মিশ্রণ, যা তৈরি হয় শুদ্ধ দেশি ঘি দিয়ে। এটি ভগবান জগন্নাথকে নিবেদন করা ৫৬ ভোগের একটি।
পোড়া পিঠে
পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী, জগন্নাথ দেব মিষ্টি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাঁর প্রিয় মিষ্টি হল পোড়া পিঠে, চালের গুঁড়ো, নারকেল, গুড় ও এলাচ দিয়ে তৈরি প্যানকেকের মতো বেকড পিঠে।
ডালমা
অনেক ডাল ও সবজি দিয়ে তৈরি একটি সুস্বাদু খাবার। এটায় একেবারে তেল ব্যবহার করা হয় না। ওড়িশার এটা খুবই জনপ্রিয় একটি ডিশ। রথযাত্রার সময় জগন্নাথ দেবকে এই খাবারটি দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য, এই ডালমা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের অনুরোধে রাষ্ট্রপতির খাবারের মেনুতেও রাখা হয়।
শান্তুলা
ভেজে বা সেদ্ধ করে, আলু, বেগুন, পেঁপে ও টম্যাটো দিয়ে তৈরি ওড়িশার জনপ্রিয় সবজির তরকারি। এতে স্বাদ যোগ করে ঘি, পাঁচফোড়ন ও লঙ্কা। এটি ভাত বা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
রসবলি
ছানার তৈরি এই মিষ্টিকে ডুবো ডুবো তেলে ভাজা হয় এবং এই মিষ্টির সবচেয়ে সেরা দিক হল এটি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের চত্ত্বরে বসেও খেতও পারবেন।
ছেনা পোড়া
পনির, চিনি, এলাচ গুঁড়ো, চালের গুঁড়ো, বাদাম ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টি, জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে যদি না খান তবে অনেক কিছুই মিস করবেন। এই মিষ্টির নরম আস্তরণ বহু ঘণ্টা রান্না করার পরই আসে।
মালপুয়া
ময়দা, দুধ, চিনি, মৌরি ও এলাচ দিয়ে তৈরি মালপুয়া পুরীর মন্দিরে সকালের খাবারে নিবেদন করা হয় জগন্নাথ দেবকে।
উখুদা
ভাজা মুড়ি ও চিনি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টি পুরীর মন্দিরে ভোগ হিসাবে দেওয়া হয়।
খাজা
ময়দা ও চিনি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টিকে খাস্তা করার জন্য তেলে ভাজা হয়। এটাও পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ দেবকে ভোগ হিসাবে দেওয়া হয়।