গরমে আম খেতে প্রায় সকলেই পছন্দ করে। খেতে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি, আমে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। যদিও আমের প্রাকৃতিক মিষ্টতা রয়েছে, তবুও ডায়াবেটিস রোগীরা তা খাবেন কি, খাবেন না তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকে সকলের মনে। জানুন আম খেলে ব্লাড সুগার বাড়ে কি না এবং ডায়াবেটিস রোগীদের কতটা পরিমাণে খেলে ক্ষতি হবে না।
আমে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও এটি উপকারী। এক কাপ কাটা আমে ৯৯ ক্যালোরি, ১.৪ গ্রাম প্রোটিন, ২৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২২.৫ গ্রাম চিনি, ২.৬ গ্রাম ফাইবার, ৬৭% ভিটামিন সি, ১৮% ফোলেট, ১০% ভিটামিন এ এবং ১০% ভিটামিন ই রয়েছে। এতে কিছু পরিমাণে ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামও রয়েছে।
রক্তে শর্করার উপর আমের প্রভাব
আমের ৯০%-র বেশি ক্যালোরি, এর মিষ্টি থেকে আসে। এই কারণেই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। তবে এর পাশাপাশি আমে রয়েছে ফাইবার এবং অনেক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা, রক্তে শর্করার প্রভাব কমায়। আমের ফাইবার রক্ত থেকে চিনির শোষণের হার কমিয়ে দেয়। সে সময় এই ফলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি রক্তে শর্করার সঙ্গে যুক্ত স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এগুলি শরীরের পক্ষে কার্বোহাইড্রেট প্রক্রিয়া করা সহজ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে।
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
রক্তে শর্করার উপর কোন খাবারের প্রভাব গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) র্যাঙ্কের মাধ্যমে জানা যায়। এটি ০-১০০ এর স্কেলে পরিমাপ করা হয়। ৫৫-এর কম র্যাঙ্কের যে কোনও খাবারকে এই স্কেলে কম শর্করা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই খাবারগুলি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। আমের জিআই র্যাঙ্ক ৫১, যার অর্থ ডায়াবেটিস রোগীরাও এটি খেতে পারেন।
মনে রাখা উচিত যে, প্রত্যেকের শরীর নির্দিষ্ট খাবারে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করে। আমে স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, তবুও আপনি কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং আম খেতে চান, তাহলে খুব সাবধানে এটিকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন।
রক্তে শর্করা যাতে না বাড়ে, সেজন্য একই সময়ে প্রচুর আম খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে ১/২ কাপ (৮২.৫ গ্রাম) আম খাওয়ার পর দেখুন রক্তে শর্করা বাড়ে কি না এবং কতটা বাড়ে। আপনি সেই অনুযায়ী আপনার আমের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন।
আমে ফাইবার বেশি কিন্তু প্রোটিন কম। প্রোটিন রক্তে শর্করা কমায়, তাই ডায়াবেটিস রোগীরা আমের সঙ্গে প্রোটিন মিশিয়ে সুষম খাদ্য তৈরি করতে পারেন। আমের সঙ্গে সেদ্ধ ডিম, পনির বা কিছু বাদামও খেতে পারেন।