খাবারের সঙ্গে জল খাওয়া নিয়ে নানা বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারের সময় কিংবা পরে জল পান করলে হজম প্রক্রিয়ায় কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না বরং হজম এবং হাইড্রেশনে সহায়ক হতে পারে।
খাবারের সঙ্গে জল খাওয়ার মিথ ও বাস্তবতা
একটি প্রচলিত ধারণা হলো খাবারের সঙ্গে জল খেলে পাকস্থলীর অ্যাসিড পাতলা হয়ে যায় এবং হজমের কার্যকারিতা নষ্ট হয়। যদিও বাস্তবতা বলছে, পাকস্থলী গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড তৈরি করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি খাবারের উপস্থিতিতেও স্বাভাবিকভাবেই কাজ করে। খাবারের সময় জল খাওয়ার ফলে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় না।
পেটের ভেতরের পরিবেশ অত্যন্ত অম্লীয়। এর pH সাধারণত ১.৫ থেকে ৩.৫ এর মধ্যে থাকে, যা হজমের জন্য প্রয়োজনীয়। জল পেটে প্রবেশ করলেও এটি পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের কার্যকারিতায় কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে না।
জল হজমে কীভাবে সাহায্য করে?
১. খাবার নরম করতে সাহায্য: জল খাবারের কণাগুলো নরম করে, যা হজম প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তোলে।
২. এনজাইমেটিক প্রক্রিয়ায় সহায়তা: জল হজমে সহায়ক এনজাইমগুলির কার্যকারিতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
৩. পুষ্টি শোষণ: জল পুষ্টি ভাঙতে এবং তা শরীরে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ: নিয়মিত জল পান পরিপাকতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়।
খাওয়ার সময় জল খাওয়ার উপকারিতা
জল আপনাকে দীর্ঘসময় পূর্ণ বোধ করাতে সাহায্য করে, ফলে ঘন ঘন খাওয়ার অভ্যাস কমে।
এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
জল পেটে খাবার জমাট বাঁধতে দেয় না এবং হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
চিনি মিশ্রিত পানীয় ও ঝুঁকি
চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারের সঙ্গে চিনি সমৃদ্ধ পানীয় পান করলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। তবে সাধারণ পানীয় জল এমন কোনো ঝুঁকি তৈরি করে না।
পরামর্শ
চিকিৎসকদের মতে, খাবারের আগে, সময় এবং পরে জল পান করা স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এটি শুধু হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে না, বরং সারা শরীরে পুষ্টি সরবরাহেও সহায়ক। তবে অতিরিক্ত জল না খেয়ে প্রয়োজনমতো পান করাই উত্তম।
খাবারের সময় বা পরে জল পান নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলোকে দূরে রেখে সঠিক পরামর্শ মেনে চলাই ভালো। জল শুধু আমাদের হজমশক্তি উন্নত করে না, এটি হাইড্রেশনের জন্যও অপরিহার্য। তাই পরিমিত পরিমাণে জল পান করুন এবং সুস্থ থাকুন।