scorecardresearch
 

Dudhkumar Mondal : 'করসেবায় গিয়েছিলাম বলে CITU-র পার্টি অফিসে মেরে অজ্ঞান করে দিল ওরা'

আমার ভাগ্য এত খারাপ বুঝতে পারিনি। ট্রেন থেকে কয়েকজন করসেবক নেমেছিল চা খেতে। আমি চাইনি ওরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক। ওদের দেখতেই ট্রেন থেকে নামি।

Advertisement
Dudhkumar Mondal Dudhkumar Mondal
হাইলাইটস
  • ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় করসেবা থেকে ফেরার পর কী হয়েছিল?
  • সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন বিজেপি নেতা দুধকুমার মণ্ডল

আমার ভাগ্য এত খারাপ বুঝতে পারিনি। ট্রেন থেকে কয়েকজন করসেবক নেমেছিল চা খেতে। আমি চাইনি ওরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক। ওদের দেখতেই ট্রেন থেকে নামি। আর নামামাত্র আমাকে কয়েকজন ছেলে একদম বগলদাবা করে চ্যাংদোলা তুলে নিয়ে যায়। বর্ধমান বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটা CITU-র অফিস ছিল। সেই অফিসে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয় ওরা। প্রথমেই ওরা আমার ব্যাগ সার্চ করল। আমার কাছে গেরুয়া উত্তরীয়, স্বস্তিকা পত্রিকা ও পরিচয়পত্র ছিল। ওরা বুঝতে পারে, আমি করসেবক। বোঝা মাত্রই খুব মারধর শুরু করে। 

সেই সময় আমার একটা হাত ভাঙাই ছিল। ওই হাত নিয়েই গিয়েছিলাম অযোধ্যা। সেই অবস্থাতেই সেই পার্টি অফিসের ভিতর শুরু হল অকথ্য অত্যাচার। কিল, ঘুসি, লাঠি দিয়ে মারধর, কী না করেনি। এত মার মারল যে একসময় অজ্ঞান হয়ে গেলাম। তারপর ওরা আরও মারধর করল কি না জানি না। 

জ্ঞান ফিরল সকালে। হাতে ঘড়ি ছিল না। তাই বুঝতেও পারলাম না কটা বাজে। তবে পার্টি অফিসের সেই টিনের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলাম লোকজন চলাফেরা করছে। তখন আর কোনওকথা না ভেবে কোনওরকমে উঠে দৌড়তে শুরু করলাম। প্রাণে বাঁচা তখন আসল উদ্দেশ্য।  

আরও পড়ুন

বর্ধমান বাসস্ট্যান্ডের কাছে আমাদের এক বিশ্বহিন্দু পরিষদের এক সংগঠকের বাড়ি ছিল। তাঁর ছেলের নাম আশিস। তিনি কলেজে পড়াতেন। আমি সেই বাড়িতে যাব বলে দিলাম ছুট। ততক্ষণে ওরাও আমাকে ধাওয়া করেছে। তবে আমি কোনওরকমে আশিসদার বাড়িতে ঢুকলাম। ওদের বাড়ির বাইরে একটা সাটার তোলা ছিল। সেটা দিয়ে ঢুকে চৌকির তলায় ঢুকে পড়লাম। তার কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে এল সিপিআইএম-এর গুন্ডারা। তারা আশিসদাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় আমি ? আশিসদা ও তার পরিবারের কেউ জানত না যে আমি ওদের বাড়ির চৌকির তলায় লুকিয়ে আছি। স্বাভাবিকভাবেই আশিসদা জানাল, ও জানে না। তারপর সেখান থেকে চলে গেল সিপিআইএম-এর লোকজন। 

Advertisement

এদিকে ওরা যেতেই আশিসদার সামনে উঠে দাঁড়ালাম। উনি তো অবাক। তখন আমি তাঁকে সব কথা বললাম। উনি আমাকে সেই বেলার মতো আশ্রয় দিলেন। খাওয়া দাওয়া করালেন। তারপর বাড়ির পিছনের গেট দিয়ে স্টেশনে নিয়ে গেলেন। এবার আমি ট্রেন ধরলাম রামপুরের জন্য। রামপুরহাটে নামলাম। তবে আমাদের কাছে নির্দেশ ছিল, এখনই বাড়ি না ফিরতে। কারণ, যে সব করসেবক বাড়ি ফিরেছিল, তাদের উপর পুলিশি অত্যাচার নেমে এসেছিল। 

আমি সেই খবর পাওয়ার পর আর বাড়ি ফিরতে পারিনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, আমার গ্রামে পুলিশি অত্যাচার হয়নি। সিপিএম-এৎ লোকজন করসেবকদের উপর অত্যাচার নামিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছিল, তবে স্থানীয় পুলিশ আটকে দিয়েছিল। সেই পুলিশ আধিকারিক মুসলিম হলেও তিনি কাউকে অত্যাচার করতে দেয়নি। এইভাবে প্রায় ৬ দিন পর আমি বাড়ি ফিরলাম। যদিও তারপরও অনেক করসেবকের বাড়িতে অত্যাচার হয়েছে। 

(লেখক দুধকুমার মণ্ডল। এই বক্তব্য একান্তই তাঁর। bangla.aajtak.in-এর দায়িত্ব নেবে না।)

Advertisement