আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে মনোনয়ন পর্ব থেকেই অশান্তির অভিযোগ। কার্যত রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভাঙড়ে। মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি কমিশনের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে কমিশনের থেকে দিন বাড়ানো নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ১৩ তারিখ পর্যন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রায় ২ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দেড় হাজার জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ রয়েছে। জায়গায় জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি যে অভিযোগগুলি উঠে এসেছে, তাতে ১৩ তারিখের রিপোর্ট অনুয়ায়ী ৬২ জন আহত হয়েছেন বলে কমিশন সূত্রে খবর। এর পাশাপাশি প্রায় চার হাজার জনের অস্ত্র লাইসেন্স জমা নেওয়া হয়েছে বলেও খবর। যেসব জায়গাগুলিতে অশান্তির অভিযোগ উঠে আসছে, সেই সব জায়গাগুলিতে আরও সজাগ নজর রাখছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই অশান্ত হয়েছে ভাঙড়, ক্যানিংয়ের মতো এলাকাগুলি। একেবারে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছে ভাঙড়। যদিও স্পর্শকাতর এলাকা বলে এখনও পর্যন্ত কিছু নির্ধারিত হয়নি বলেই কমিশন সূত্রে খবর। মনোনয়নের শুরুতেই খুন, অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপির অভিযোগ উঠছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল। সিভি আনন্দ বোস রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার সঙ্গে বৈঠক করে কড়া বার্তা দিয়েছেন।
বুধবার পর্যন্ত হিংসায় এখনও পর্যন্ত ২০০০ লোককে আটক করা হয়েছে। ৬২ জন আহত। ১৫০০ জন জামি-অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪০০০ লাইসেন্স আগ্নেয়াস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পরই নিরাপত্তার বিষয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে ১০০ শতাংশ বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেইমতো নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, যেখানে যেখানে গন্ডগোল হচ্ছে, সেই জায়গাগুলোতে আরও বেশি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
পাঁচ জেলায় বিশেষ নজর রাখছে কমিশন। তালিকায় রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর ও জলপাইগুড়ি। এ বিষয়ে কমিশনের প্রথম নির্দেশ, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। কমিশনের নির্দেশ, ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে যাতে কারও কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেক বুথে পানীয় জল এবং ছাউনির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সূত্রের খবর, শনিবার থেকে রাজ্য পুলিশের সমস্ত বিভাগের সব কর্মী, আধিকারিকের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের কারণে। ভোটের ফলপ্রকাশ অর্থাৎ আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত বাতিল করা হচ্ছে সব ছুটি।