পঞ্চায়েত ভোটের জন্য আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগেই ২২ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছিল। সবমিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের থেকে চাইল কমিশন। গতকালই কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল যাতে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের চেয়ে এবার বেশি পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্দেশ কার্যকর করতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আদালত। যা মানল কমিশন। সেবার এসেছিল ৮২০ কোম্পানি বাহিনী। এবার তার থেকে ২ কোম্পানি বেশি বাহিনী চেয়ে পাঠাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট পঞ্চায়েত ভোটে স্পর্শকাতর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। যদিও পরে হিংসার ছবি দেখে গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান রাজ্য নির্বাচন কমিশন। যদিও সুপ্রিম কোর্টেও জানিয়ে দেয় ভোট করাতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই। এরপরই ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানায় কমিশন।
যদিও, হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করা হয়নি এই অভিযোগে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালু। বুধবার ওই মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিতে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন জানায়, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এরপর কমিশনের তরফে আইনজীবী স্পষ্ট করেন যে প্রতি জেলায় এক কোম্পানি বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
শুনানিতে বিজেপি জানিয়েছিল, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ৮২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে। এরপরই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানোর নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলে, 'নিরাপত্তার জন্যও অন্তত ওই সংখ্যক বা তার বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কম বাহিনী মোতায়েন করলে চলবে না। আর এই বাহিনীর জন্য কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জানাতে হবে কেন্দ্রকে।'
পাশাপাশি, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখেও পড়েন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা৷ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদি আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারেন, তাহলে তিনি যেন পদ ছেড়ে দেন৷ তাঁর জায়গায় নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল৷ এদিকে, বুধবার রাতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্টে সই না-করে ফেরত পাঠিয়ে দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।