জ্য়োতিষ মতে, ব্যক্তির জন্মছকে অত্যন্ত ভয়াবহ একটি অবস্থান হল কালসর্প যোগ। কোনও জাতকের জন্মছকে এই দোষ দেখা দিলে তাঁর জীবন তছনছ হয়ে যায়। কালসর্প দোষে প্রভাবিত ব্যক্তি যাই করতে যাবেন, তাতেই ব্যর্থ হবেন। জীবনের সমস্ত শুভ প্রভাবই নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই দোষের ফলে। সফলতা কোনওসময়েই অর্জন করতে পারবেন না। তাই, কারুর জন্মছকে কালসর্প যোগ থাকলে তা নিবারণ করার জন্য বিশেষ পুজো-অর্চনা করার পরামর্শ দেন জ্যোতিষবিদরা।
নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানুন শিবরাত্রিতে
জ্যোতিষবিদদের মতে, মহাশিবরাত্রিতে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে মহাদেবের পুজো করলেই এই দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে মহাশিবরাত্রি। দেখে নিন, এই দিনে কী কী উপায় করলে ভয়াবহ কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
আরও পড়ুন: আজ তৈরি হবে অতিশুভ মালব্য রাজযোগ, বিপুল অর্থ-সম্পত্তি লাভের সম্ভাবনা ৪ রাশির
কালসর্প দোষ কখন তৈরি হয়
জন্মছকে রাহু-কেতুর মাঝখানে যদি গ্রহ চলে আসে, তখন এই দোষকে কালসর্প দোষ বলা হয়ে থাকে। কালসর্প দোষের অনেক প্রকার আছে, যেমন - অনন্ত কালসর্প দোষ, কুলিক কালসর্প দোষ, শেশনাগ দোষ, বিষধর দোষ, ইত্যাদি। কাল নামে চিহ্নিত হয় রাহু। জ্যোতিষশাস্ত্রে, রাহুকে সাপের মুখ এবং কেতুকে সাপের লেজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: শনির কোপ, ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ রাশির চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা
বিবাহের উপর কালসর্প দোষের প্রভাব
কোনও ব্যক্তির জন্মছকে কেতু যখন সপ্তম ঘরে থাকে এবং রাহু প্রথম ঘরে থাকে, তখন কালসর্প দোষ বৈবাহিক জীবনে নানা বাধার সৃষ্টি করে। এই দোষের কারণে বিবাহিত জীবনে খুব খারাপ প্রভাব পড়ে। দাম্পত্য জীবন একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ে। দম্পতিদের মধ্যে নানা সমস্যা, অশান্তি-ঝামেলা দেখা দেয়। জীবনে একেবারেই সুখ, শান্তি থাকে না।
শিব পুজোয় মেলে কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি
জন্মছকে কালসর্প দোষ থাকলে এই মহাশিবরাত্রিতে অবশ্যই শিবের পুজো করার ক্ষেত্রে কিছু উপায় করতে হবে
১) মহাশিবরাত্রিতে উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বরে বা নাসিকের ত্রিম্বকেশ্বর জ্যোতিলিঙ্গ অথবা প্রয়াগরাজে অবস্থিত তক্ষকেশ্বর মহাদেব মন্দিরে বিধি মেনে পুজো-অর্চনা এবং রুদ্রাভিষেক করা হলে কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
২) কালসর্প দোষ থেকে বাঁচতে শিবরাত্রিতে মহাদেবকে এক জোড়া রূপোর সাপ নিবেদন করুন।
৩) মহাশিবরাত্রির দিন থেকে দিনে দু'বার মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করুন। এর ফলে কালসর্প দোষের যাবতীয় খারাপ প্রভাব কেটে যায় বলে বিশ্বাস।
৪) শিবরাত্রির দিনে 'ওঁ নাগকুলায় বিদ্মহে বিশদন্তায় ধীমহি তন্নো সর্প প্রচোদয়াৎ' মন্ত্রটি জপ করুন।
৫) শিবলিঙ্গে দুধ ও জল নিবেদন করে রুদ্রাভিষেক করুন।
৬) কালসর্প দোষে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মহাশিবরাত্রির পাশাপাশি নাগ পঞ্চমীতেও পুজোঅর্চনা করতে পারেন। এতে কালসর্প দোষের খারাপ প্রভাব থেকে মুক্তি মিলতে পারে।