Radha Ashtami 2024: বারসানার রাধারানী হলেন মা লক্ষ্মী। যে কোনও কাজে সাফল্য পেতে হলে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রয়োজন। তাই জীবনের সুখ সমৃদ্ধি এবং আর্থিক দিক থেকে সচ্ছল হতে গেলে মা লক্ষ্মী তথা রাধারানীকে সন্তুষ্ট রাখা অত্যন্ত জরুরি। এমন কোন কাজ করবেন না যাতে মা লক্ষ্মী বা রাধারানী রুস্ট হন। যার উপর রাধারানী রুষ্ট হন। কৃষ্ণ তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। স্বয়ং কৃষ্ণ বলেছেন যে ব্যক্তি রাধা নাম করে সেই ব্যক্তি আমার অত্যন্ত প্রিয়।
ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রাধা অষ্টমী পালিত হয়। জন্মাষ্টমীর ১৫ দিন পর আসে এই উৎসব। কথিত আছে রাধা অষ্টমীর পুজো না করলে জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণের পুজো ও ব্রত করলে কোন ফল হয় না। রাধারানি ছিলেন শ্রী কৃষ্ণের প্রিয়তমা, তাকে দেবী লক্ষ্মীর রূপ মনে করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে রাধা অষ্টমীতে যারা রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা করেন তাদের কখনও অর্থের অভাব হয় না। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই বছরের রাধা অষ্টমীর তারিখ, শুভ সময় ও গুরুত্ব। জ্যোতিষশাস্ত্রে ও হিন্দুধর্মে রাধাষ্টমীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিবছর জন্মাষ্টমীর থেকে ১৫ দিন পরেই হয় রাধাষ্টমী। এদিন রাধারানির বিশেষ পুজোর আয়োজন করেন সকলে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের খুব প্রিয় হলেন রাধারানি।
কবে রাধাষ্টমী?
এবার রাধাষ্টমী ২০২৪ এর তারিখ পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখ। এই বছর ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথি ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত ১১:১১ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে এবং এই তিথি বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১১:৪৬ মিনিটে শেষ হবে৷ উদয়তিথির ভিত্তিতে ১১ সেপ্টেম্বর রাধা অষ্টমীর পবিত্র উৎসব পালিত হবে।
রাধা অষ্টমীর পুজো সময়
রাধা অষ্টমীর দিন পুজো করার জন্য ২ ঘণ্টা ২৯ মিনিটের শুভ সময় পাবেন। যারা উপোস করবেন তারা রাধা অষ্টমীর পুজো করতে পারবেন সকাল ১১.০৩ থেকে দুপুর ১.৩২ পর্যন্ত। রাধা অষ্টমীর দুপুরে পুজো হয়।
এই বছর রাধা অষ্টমীর দিনে ২টি শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে৷ রাধা অষ্টমীতে সকাল থেকে রাত ১১.৫৫ মিনিট পর্যন্ত প্রীতি যোগ চলছে। এরপর থেকে আয়ুষ্মানের জন্ম হবে। রাধাঅষ্টমীর পুজো হবে প্রীতি যোগে। যেখানে রাত্রি ০৯:২২ তে রবি যোগ গঠিত হবে এবং ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ৬:০৫ পর্যন্ত চলবে।
রাধাঅষ্টমী ব্রতের সময় কিছু খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ
রাধা অষ্টমীর দিন রসুন ও পেঁয়াজ খাওয়া উচিত নয়। এগুলিকে তামসিক খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হয় যা মনকে বিরক্ত করতে পারে। শ্রদ্ধা ও ভক্তি সহকারে রোজা পালন করতে হলে তাদের থেকে দূরে থাকাই বাঞ্ছনীয়। রাধা অষ্টমীর দিন নিরামিষ খাবার খাওয়া উচিত। এই দিনে মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি খাওয়া নিষিদ্ধ। এগুলোকে সাত্ত্বিক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। মশলাদার এবং ভাজা মশলাদার খাবারও এই দিনে খাওয়া উচিত নয়। এগুলো পরিপাকতন্ত্রের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং মনকে বিক্ষিপ্ত করতে পারে। কেউ কেউ রাধা অষ্টমীর উপবাসে লবণ খান না। তবে শিলা লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। তেতো স্বাদের খাবার যেমন করলা, নিম ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। এগুলো রসের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে রাধা অষ্টমীর দিন অঙ্কুরিত শস্য যেমন বার্লি, গম ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। এই পবিত্র দিনে টাটকা ও সাত্ত্বিক খাবার খেতে হবে। বাসি ও নষ্ট খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: চা, কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এই দিনে খাওয়া উচিত নয়। এগুলো মনকে বিরক্ত করতে পারে।
এ ছাড়া চারটি সবজি খাওয়া একেবারে নিষিদ্ধ। এই সবজিগুলি খেলে সারা বছর চরম অর্থ কষ্টে ভুগতে হবে। না হলে সংসারে আগুন জ্বলবে এবং হঠাৎ করে আসা রোগ ব্যাধি আপনাকে নাজেহাল করে দেবে। কাজকর্মে বাধার সৃষ্টি করবে, ব্যবসা বা চাকরির জায়গায় প্রচন্ড সমস্যা সৃষ্টি করবে। আর্থিক সংকটে পড়ে মানুষ ভিখারি হয়ে যেতে পারে। তাই অষ্টমীর দিন ভুল করে মুখে তুলবেন না এই চারটি সবজি।
প্রথম নিষিদ্ধ সবজির মধ্যে যে কোন তিতো খাওয়া বারণ। করলা, চিরতা, নিম, উচ্ছে এই সমস্ত কখনওই খাবেন না। ভুল করেও মুখে তুলবেন না। এদিন তেতো খাবার খেলে জীবনের তিক্ততা আসে। ছোটখাটো নানান কারণে সংসারে অশান্তি লেগে থাকে। যার প্রভাব পড়ে কাজকর্ম এবং আয় এর জায়গায়।
দ্বিতীয়ত রাধাষ্টমীর দিন ভুল করেও খাবেন না নারকেল। কাঁচা বা রান্না করা কোনওভাবেই নারকেল মুখে তুলবেন না বা নারকেলের তৈরি নাড়ু বা নারকেল রয়েছে এমন কোন জিনিস দাঁতে কাটাও পাপ। নারকেল খেলে বুদ্ধি নাশ হয় পরে আপনি ধনসংকটে পড়তে পারেন।
তৃতীয় সব্জিটি হল পুঁইশাক। শাস্ত্রে বলা আছে পুঁই শাক খেলে শরীরে তামসিক গুণ বৃদ্ধি পায়। যে কোনও শুভ কাজ করার সময় সাত্বিকগুণকে জাগ্রত রাখা প্রয়োজন। তামসিক গুণ পুজোর গুণ নষ্ট করে। এই দিন কোনও পোড়া বা সেঁকা খাবারও খাবেন না।
চতুর্থ এই নিষিদ্ধ শব্দটি হল লাউ। রাধাষ্টমীর দিন লাউ খাবেন না। এদিন যদি লাউ খান তাহলে সারা বছর নানান রোগে ভুগতে হবে। পুরনো রোগ ছেড়ে যাবে না। শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। রোগের পিছনে খরচ করতে করতে আপনিও সর্বস্বান্ত হয়ে যাবেন। আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা কোনভাবেই লাউ খাবেন না।