50 Years Of Bapuji Cake: শীত পড়ে গিয়েছে। বড়দিনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে প্রায় সর্বত্র। শীতের আমেজে বাজারে ফিরছে নানা রকম কেক। একটু একটু করে সেজে উঠছে কেকের বাজার। তবে বড় বড় সংস্থার কেকের চাহিদা থাকলেও ছোট ছোট বেকারিগুলির বাজার এ বছর তেমন ভাল নয়। কেকের কাঁচামালের দাম এখন আকাশছোঁয়া! মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে কোনও মতে। এ সবের মধ্যেই বিজ্ঞাপন, মোড়কের চাকচিক্য ছাড়াই বাঙালির মনে আর চটজলদি খিদে মেটানোর প্রয়োজনে আজও রয়েছে বাপুজী কেক।
অনেকরই ছেলেবেলার স্মৃতিতে স্কুলের টিফিনে, বিকেলের খুচরো-খিদে মেটাতে সস্তায় ‘পুষ্টিকর’ কেক মানেই বাপুজী। আট বা নয়ের দশকে জন্মানো ছেলেপুলেরা জানেন স্বাধীনতা দিবস থেকে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা— সবেতেই হালকা টিফিনের ভরসা ছিল বাপুজী কেক।
বাংলায় বাপুজী কেকের পথ চলা পাকাপাকি ভাবে শুরু হয় ১৯৭৩ সালে। বেকারির কাজ তার আগে শুরু হলেও ওই বছর আলোকেশ জানা প্রথম ‘নিউ হওড়া বেকারি প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে নিজের সংস্থার রেজিস্ট্রেশন করেন। পথচলা শুরু হয় বাঙালির সাধের বাপুজী কেকের। সেই পথচলার ৫০ বছরে কেমন আছে বাঙালির সস্তার স্বাদু ফ্রুট কেক বাপুজীর স্বাস্থ্য (ব্যবসা-চাহিদা)?
বাপুজী কেক মূলত বাঙালি মধ্যবিত্তর পকেটসই দামে মেলা বিশেষ ধরনের ‘সলিড’ ফ্রুট কেক। কেকের পাশাপাশি বিভিন্ন বিস্কুট আর পাউরুটিও তৈরি করছে এই সংস্থা। এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা অলোকেশ জানার দুই ছেলে অনিমেষ জানা এবং অমিতাভ জানা এখন বাপুজী কেকের ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। কেকের মোড়কের চাকচিক্য বাড়াতে গিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার করতে চান না বাপুজী কেকের বর্তমান মালিকরা। কারণ, এর জন্মলগ্ন থেকেই পরিবেশবান্ধব বাটার পেপার কেকের মোড়ক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর প্লাস্টিক দূষণ বর্তমানে যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে মোড়কের চাকচিক্য বাড়াতে প্লাস্টিকের ব্যবহার কোনও মতেই করতে চান না বলে জানান অমিতাভ জানা।
অমিতাভ জানা bangla.aajtak.in-কে জানান, ৫০ বছরে কেকের দাম সে ভাবে না বাড়লেও বিক্রি বেড়েছে বাপুজী কেকের। তিনি বলেন, “এই পাঁচ দশকে কেকের কাঁচামালের দাম তিন থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু মুনাফার সঙ্গে আপোষ করলেও কেকের দাম সে ভাবে বাড়াইনি। আর সে জন্যই হয় তো আম বাঙালির কাছে কদর কমেনি বাপুজী কেকের। তবে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে কেকের দাম না বাড়ালে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে। অন্তত দু’শো পরিবারের রুজি-রুটি চলে এই বেকারি থেকে। এরা সরাসরি কেক ও অন্যান্য বেকারি সামগ্রির উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়াও এর বিপনন-বন্টনের উপর নির্ভর করেও অনেকের দিন গুজারন হয়। কোম্পানির মুনাফা কমালেও কর্মীদের মাইনে কমানো যায় না।”
বড়দিনের জন্য বিশেষ ধরনের ফ্রুট কেক আছে বাপুজীর। তবে বাপুজীর টিফিন কেকের দাম বাড়ায়নি সংস্থা। এই ৫০ বছরে কেকের মোড়কের জৌলুস বাড়েনি এতটুকু, স্বাদেও খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। দাম যে টুকু বেড়েছে, তা এখনও নিম্ন মধ্যবিত্তর সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। তাই আজও হাজারও নামী-দামি কেকের ভীড়ে বাঙালির খুচরো খিদে মেটাচ্ছে বাপুজী কেক।