scorecardresearch
 

Once Banned Saree Now Popular In Pakistan: অইসলামিক বলা হয়েছিল একসময়, পাকিস্তানে এখন চোখে হারাচ্ছে সেই শাড়িই

Once Banned Saree Now Popular In Pakistan: আয়লা খান বলেন, আসলে বাস্তবে শাড়ি কখনও যায়নি। সেখানে করাচির আয়েশা জরির কাছে তিরিশের বেশি শাড়ি কালেকশন রয়েছে। ই-কমার্স ফার্মে কাজকর্মে করা ২৬ বছরের জরি ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন যে আমি পার্টি এবং বিয়েতে শাড়ি পড়ে যাই। আমি নিজের জন্য শাড়ি কিনেছি। তিনি বলেন যে আমি আরও বেশি শাড়ি পড়তে শুরু করব। পাকিস্তানি বিভিন্ন টিভি স্টার এবং সিনেমা তারকারা শাড়িতে প্রকাশ্যে আসছেন।

Advertisement
অইসলামিক বলা হয়েছিল একসময়, পাকিস্তানে এখন চোখে হারাচ্ছে সেই শাড়িই অইসলামিক বলা হয়েছিল একসময়, পাকিস্তানে এখন চোখে হারাচ্ছে সেই শাড়িই
হাইলাইটস
  • অইসলামিক বলা হয়েছিল একসময়
  • এখন পাকিস্তানে চোখে হারাচ্ছে সেই শাড়িই

Once Banned Saree Now Popular In Pakistan: একটি লাভ স্টোরি এ সময় দেশে চর্চার বিষয় হয়ে রয়েছে। সীমা এবং সচিন পাবজির মাধ্যমে পরিচিত হন এবং তারপরে তারা প্রেমে পড়েন। এরপরে সীমা হায়দার নিজের সমস্ত বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে নেপাল হয়ে ঘুরে ভারতে ঢুকে পড়েন। সোজা চলে যান সচিনের বাড়িতে। প্রায় একমাস সচিনের সঙ্গেগ্রেটার নয়ডা এলাকায় তিনি থাকেন। ওই পাকিস্তানী মহিলা যে বাড়িতে ভাড়া ছিলেন, মালিক জানিয়েছেন বুঝতেই পারেননি, যে তিনি পাকিস্তানী। কারণ তিনি শাড়ি পড়েছিলেন।

সেখানে প্রায় এক বছর আগে ভারতীয় লোকেরাও পাকিস্তানি ভারতনাট্যম ডান্সার সীমা কিরমানিকে দেখে কনফিউজ হয়ে গিয়েছিলেন যে তিনি পাকিস্তানী না ভারতীয়। এমন একারণে হয়েছিল যে বিখ্যাত গান পসুরির ভিডিওতে তিনি শাড়ি পড়েছেন।

ভারতীয়রা এটা জানার জন্য সব সময় উৎসুক যে পাকিস্তানি মহিলারা শাড়ি পড়েন কি না, তাহলে জবাব হলো হ্যাঁ। সেখানে মহিলারা শাড়ি পড়েন এবং পড়া পছন্দ করেন। করাচিতে ৭০ বছর পূরণ করা কাপড়ের নির্মাণকারী কোম্পানি হিলাল সিল্কের তালহা বাটলা ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন, যদি আমরা পাকিস্তানি মহিলাদের বর্তমান প্রজন্মকে দেখি বা তার কথা বলি তাহলে তারা  শাড়িকে একটি প্রতিষ্ঠিত পোশাক বলে মনে করেন এবং পড়তে পছন্দ করেন, যা শুধুমাত্র বিয়ে বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পরা যেতে পারে।

Advertisement

বাটলা বলেন যে, যদি আপনি রোজকার জীবনের দিকে নজর দেন, তাহলে আপনি পাকিস্তানে একজনকেও শাড়ি পরে দেখতে পাবেন না। এখানে রোজ শাড়ি পড়ে ঘোরাফেরা একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছে। তিনি সাত বছর আগে একটি ডিজাইনার লেভেল তালহা বাটলা শুরু করেছিলেন। বাটলা জানিয়েছেন যে মহিলাদের বিয়েতে শাড়ি পরার চল রয়েছে ।আপনি কোনও পাকিস্তানি বিয়েতে যান, তাহলে আপনি মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন মহিলাকে শাড়িতে দেখতে পাবেন। এটা একটা বড় সংখ্যা। কারণ শাড়ি ছাড়াও এখানে অনেক অপশন রয়েছে। তালহা বাটলার তরফ থেকে বানানোর শাড়ির দাম ২ লাখ পাকিস্তানি টাকা। বাটলা বলেন যে তাঁরা সুতির শাড়ি বানানো বন্ধ করে দিয়েছেন এবং তাঁদের সমস্ত শাড়ি, গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানে পরে আসেন।

আরও পড়ুন

শাড়ির সঙ্গে জড়িত আরও গল্পগুলো যাদের বিষয়ে আপনাদের জানা জরুরি আসুন এক নজর জেনে নিই

জিয়াউল হক শাড়িকেকে ও ইসলামিক বলে ব্যান করে দিয়েছিলেন

১৯৪৭ সালের আগে হিন্দু এবং পার্সি মহিলারা শাড়ি রোজকার জীবনে পড়তেন। বিভাজনের পরে যখন লোকেরা বিশেষ করে বিহার এবং উত্তর ভারত থেকে পাকিস্তানে চলে যান, তখন তারা নিজেদের সঙ্গে শাড়ি কালচারও নিয়ে যান। এ কারণে পাকিস্তানের সিন্ধ এবং করাচি প্রান্তের শাড়ি বেশি প্রচলিত ছিল। ১৯৭০ এর দশকে পাকিস্তানের শাড়ি দেখতে পাবেন। সিনেমাগুলোতে বিখ্যাত ব্যক্তিরা শাড়ি পড়ে ঘোরাফেরা করতে এবং খবরের কাগজে ডালডা এবং পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এর বিজ্ঞাপনেও মহিলাদের শাড়ি পরেই দেখা যেত।

বাংলাদেশ সেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সুন্দর সুন্দর জামদানি শাড়ি পাকিস্তানের পৌঁছায়

এরপরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ লিবারেশন যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পাকিস্তানের খুব খারাপ ভাবে হার হয় এবং পূর্বক্ষেত্রের স্বাধীনতা ঘোষণা হয়ে যায়। সেই সময়ে শাড়ি পড়ে মিছিল করা মুক্তিযোদ্ধার মহিলাদের মিছিল নিশ্চিত রূপে পাকিস্তানিদের মস্তিষ্কে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। সবচেয়ে বড় সংকটের সামনে তখন পড়তে হয়েছিল, যখন জেনারেল জিয়াউল হক ১৯৭৭ সালে একটি সেনা অভ্যুত্থানে পাকিস্তানের গদি দখল করেন এবং পাকিস্তানকে ইসলামীকরণের দিকে ঠেলে দেন। ১৯৮০ দশকে জিয়া সরকারি মহিলা কর্মচারীদের এবং কলেজে মহিলা ছাত্রদের নিজেদের মাথা ঢাকা নির্দেশ দেন। ১৯৮৩ এর একটি ক্রিশ্চিয়ান সাইন্স মনিটরের রিপোর্ট অনুযায়ী সেই সময় মহিলাদের দ্বারা পড়া শাড়িকেও সরকারি কর্মচারীদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কারণ এটা পড়ে মহিলাদের পাকিস্তানি কম, ভারতীয় বেশি মনে হচ্ছিল।

ভারতনাট্যম নৃত্যঙ্গনা সীমা কিরমানি বলেন যে, আমার মা এবং তাঁর সমস্ত বোনেরা নিজেদের পুরো জীবন কেবল শাড়িই পড়েছেন। আমি অনেক কম বয়সেই শাড়ি পড়া শুরু করি। তিনি একটি সামাজিক কার্যকর্তা এবং তেহেরিক-এ-মেসওয়ান এর সংস্থাপক। যিনি মহিলাদের বিকাশের জন্য কাজ করেন। পাকিস্তানের শাড়ির বিরুদ্ধে থাকা জিয়া হক ১৯৮৮ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনার মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু ক্ষতি আগেই হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তানের বাজারের শাড়ি প্রায় গায়েব হয়ে যায়। সালোয়ার কামিজ সেই জায়গা দখল করে নেয়। কিন্তু শাড়ি সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়নি। যেভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা লড়াইয়ের পাকিস্তানি সেনার মোকাবিলা করেন, সেই সময় শাড়ি লুকিয়ে পড়ে আলমারির মধ্যে। তা সামনে দীর্ঘদিন পর্যন্ত শাড়ি পাকিস্তানি নিষিদ্ধ ছিল।

শাড়ি ফের পাকিস্তানি ফেরত আসছে, কিন্তু কীভাবে?

করাচির হিলাল সেল্কের তালহা বাটলা জানিয়েছেন যে ভারত এবং পাকিস্তান কখনও একই দেশ ছিল। আমাদের মূল শিকড় একই এবং আমরা বংশপরম্পরায় এভাবে চলে আসছি। শাড়ি আমাদের ফ্যাশন রূপে দেখা হয়। ২৯ বছরের এক মহিলা আয়লা খান বলেছেন যে তিনি ছোট থেকেই নিজের ঠাকুমার শাড়ি পড়ে দেখে বড় হয়েছেন এবং এই শাড়ি তার প্রথম স্মৃতি। আয়লা একটি ডেন্টিস্ট এবং ফার্মা মার্কেটিংয়ে কাজ করেন। আয়লা খানের পরিবার বিভাজনের সময় ভারত থেকে পাকিস্তান চলে আসেন। কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছেন যে, আমরা সব সবচেয়ে প্রথম শাড়ি পড়ি ১৫ বছর বয়সে। হাইস্কুলের এটি প্রোগ্রামে লোক আমার শাড়ি পড়ার প্রশংসা করেছিল। আয়লা খান জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর কাছে প্রায় ২৫ টি শাড়ির কালেকশন রয়েছে। তিনি নিজেই ডিজাইন করেছেন, কিছু কিনেছেন। 

Advertisement

পাকিস্তানের কি সারি ফিরে আসছে?

এই প্রশ্ন শুনে আয়লা খান বলেন, আসলে বাস্তবে শাড়ি কখনও যায়নি। সেখানে করাচির আয়েশা জরির কাছে তিরিশের বেশি শাড়ি কালেকশন রয়েছে। ই-কমার্স ফার্মে কাজকর্মে করা ২৬ বছরের জরি ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন যে আমি পার্টি এবং বিয়েতে শাড়ি পড়ে যাই। আমি নিজের জন্য শাড়ি কিনেছি। তিনি বলেন যে আমি আরও বেশি শাড়ি পড়তে শুরু করব। পাকিস্তানি বিভিন্ন টিভি স্টার এবং সিনেমা তারকারা শাড়িতে প্রকাশ্যে আসছেন।

 

Advertisement