Lithium Reserve in Jammu & Kashmir: স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক বা সাধারণ গাড়ি বা অন্য যেকোন ব্যাটারি পণ্যই হোক না কেন- এসবের মধ্যেই লিথিয়াম (Lithium) আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আগামী সময়ে শক্তির প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্বের সব দেশই পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনছে। এর মধ্যে লিথিয়ামের একটি বড় অবদান রয়েছে।
আসলে, এর কারণ হল লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সঞ্চয় করতে ব্যবহৃত হয়। একসময় যে লিথিয়ামের কোনও চাহিদা ছিল না, তা এই বিপ্লবী উদ্ভাবনের কারণে 'সোনা' হয়ে গেছে।
ভারতেও (India) লিথিয়াম প্রচুর পরিমাণে মজুত আছে। জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu & Kashmir) রেয়াসি জেলায় এটি পাওয়া গেছে। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার মতে, জম্মু ও কাশ্মীরে পাওয়া লিথিয়াম ৫.৯ মিলিয়ন টন।
এতে দেশে কোনও পরিবর্তন আসবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই লিথিয়াম কি দেশে নতুন বিপ্লব আনবে? এই লিথিয়াম রিজার্ভ কি আমাদের জন্য বিশ্বগুরু হওয়ার সুযোগ? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে, লিথিয়ামের ভূমিকা বুঝতে হবে।
কেন লিথিয়াম এত গুরুত্বপূর্ণ?
সারা বিশ্বে সবুজ শক্তিতে রূপান্তর করার কথা বলা হচ্ছে। সারা বিশ্বের সরকার কার্বন নিঃসরণ কমাতে সবুজ শক্তির প্রচার করছে। এতে লিথিয়ামের বড় ভূমিকা রয়েছে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির সাহায্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংরক্ষণ করা যায়। এই শক্তি পরে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এর ভাল দিক হল, এই ব্যাটারি রিচার্জেবল, আবার দীর্ঘদিন চলে। যে কারণে লিথিয়াম ভবিষ্যতে একটি অপরিহার্য ধাতু হয়ে উঠবে। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে অন্যান্য ধাতুও থাকে, তবে এতে প্রধান ভূমিকা লিথিয়ামের।
ইলেকট্রিক গাড়ি হোক বা বড় ইলেকট্রিক ট্রাক, সবেতেই ব্যবহার করা হয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। ভারতে লিথিয়াম মজুতের পর, ব্যাটারি উত্পাদনকে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে।
লিথিয়াম খরচ কত?
লিথিয়ামের দাম পরিবর্তিত হয়। পুঁজিবাজারে যেমন একটি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য প্রতিদিন নির্ধারিত হয়, তেমনি একটি পণ্যের বাজারও রয়েছে। এই বাজারে ধাতুর মূল্য নির্ধারিত হয়। প্রতিবেদনটি লেখার সময় লিথিয়ামের মূল্য ছিল ৪৭২৫০০ ইউয়ান (প্রায় ৫৭,৩৬,১১৯ টাকা) প্রতি টন।
সেই অনুযায়ী, ভারতীয় টাকায় এক টন লিথিয়ামের দাম ৫৭.৩৬ লক্ষ টাকা। ভারতে ৫৯ লাখ টন লিথিয়ামের পাওয়া গেছে। অর্থাৎ আজকের সময়ে এর মূল্য হবে ৩৩,৮৪,৩১,০২১ লক্ষ টাকা। এই মূল্য আজকের হারে। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সঙ্গে এর দাম প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হতে থাকে।
লিথিয়াম উৎপাদনে শীর্ষে কে?
লিথিয়াম উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের লিথিয়ামের ৫২ শতাংশ উত্পাদন করে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিলি, যার ভাগ ২৪.৫ শতাংশ। তিন নম্বরে রয়েছে চিন, যা ১৩.২ শতাংশ লিথিয়াম উৎপাদন করে। এই তিনটি দেশ বিশ্বের লিথিয়ামের মাত্র ৯০ শতাংশ উৎপাদন করে।
চাহিদা দ্রুত বাড়ছে
যেহেতু, বিশ্বের সমস্ত দেশ সবুজ শক্তিতে স্যুইচ করার জন্য নিযুক্ত রয়েছে। লিথিয়ামের মান বাড়ানো অপরিহার্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে লিথিয়ামের চাহিদা ৩০ গুণ বেড়েছে।
একই সময়ে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে এর চাহিদা ১০০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এর দামও বাড়বে নিশ্চিত। দেশে লিথিয়ামের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী সময়ে ব্যাটারির দাম কমতে পারে। এতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমবে। এগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা ও দূষণও কমবে।
(ছবি: Getty Image)