Bharat Gaurav Swami Vivekananda: স্বামী বিবেকানন্দ ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। স্বামী বিবেকানন্দের পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত এবং মাতার নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। স্বামী বিবেকানন্দের ছোটবেলার নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। কিন্তু যে নাম দিয়ে তিনি দেশে বিদেশে পরিচিতি তৈরি করেছিলেন, সেই নামটিই পরে পেয়েছেন। নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে স্বামী বিবেকানন্দ নাম পরিবর্তনের গল্পটি খুবই অনন্য।
নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে ওঠার গল্প
নরেন্দ্রনাথ থেকে স্বামী বিবেকানন্দের নাম নেওয়ার পেছনের গল্পটি খুবই মজার। এ ঘটনা তার যুক্তরাষ্ট্র সফরের সঙ্গে জড়িত। ব্যাপারটা এমনই হয়েছিল যে স্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকায় অনুষ্ঠিত ধর্ম সংসদে হিন্দি ভাষায় বক্তৃতা শুরু করেছিলেন। 'আমেরিকা কে ভাইয়ো অর বেহনো' বলার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সবার মন জয় করে নেন।
স্বামীজি ভারতীয় ধর্ম ও দর্শন নিয়ে কথা বললেন, সেখানে উপস্থিত সকলেই তাঁর বক্তৃতা শুনে অবাক হয়ে গেলেন। এর কারণ এই যে, এত অল্প বয়সে ভারতীয় ধর্ম ও দর্শন নিয়ে এত জোরদার বক্তৃতা আর কেউ দেননি।
স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতার পর শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউট পুরো দুই মিনিট করতালির শব্দে ভরে গিয়েছিল। স্বামীজির এই ভাষণ আজও স্মরণীয়। শুধু তাই নয়, এটি ভারতের ইতিহাসে গৌরব ও সম্মানের ঘটনা হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দের আমেরিকা যাওয়ার টাকা ছিল না। তার আমেরিকা ভ্রমণের পুরো খরচ রাজপুতানার ক্ষেত্রী রাজা বহন করেন। তিনি নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে স্বামীজিকে স্বামী বিবেকানন্দের নামও দিয়েছিলেন।
বিখ্যাত ফরাসি লেখক রোমেন রোল্যান্ডও তাঁর বই 'দ্য লাইফ অফ বিবেকানন্দ অ্যান্ড দ্য ইউনিভার্সাল গসপেল'-এ (The Life of Vivekananda and the Universal Gospel) এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন যে ১৮৯১ সালে শিকাগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধর্ম সংসদে যাওয়ার জন্য স্বামীজি শুধুমাত্র রাজার পরামর্শে এই নামটি গ্রহণ করেছিলেন।
বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে যুব দিবস পালিত হয়
স্বামীজিকে ধর্ম, ইতিহাস, দর্শন, শিল্প, সামাজিক বিজ্ঞান এবং সাহিত্যের ভাণ্ডার বলা হয়। লেখাপড়ার পাশাপাশি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতেও তার জ্ঞান ছিল এবং একজন ভালো বাদকও ছিলেন। স্বামীজির অমূল্য চিন্তা ও কাজ তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা।
তাই প্রতি বছর স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী অর্থাৎ ১২ জানুয়ারি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন ভারত সরকার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় যুব দিবস হিসাবে উদযাপন করার ঘোষণা করে।