Netaji Subhas Chandra Bose Birth Day: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) নাম উঠলেই একাধিক দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড ভিড় করে মগজে। ছদ্মবেশে গৃহত্যাগ, হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাত্, পৃথক সেনা বাহিনী গড়ে ইংরেজদের সমানে সমানে টক্কর দেওয়া... কত কী! সুভাষচন্দ্রের মতো এমন বঙ্গ সন্তানের পূর্বাপর নেই।
ভারতের প্রথম স্বাধীন সরকার
এই ভারতেই সুভাষ গড়েছিলেন আজাদ হিন্দ সরকার (Azad Hind Government)। ইংরেজের ভারতে এক সমান্তরাল সরকার। ভারতের প্রথম স্বাধীন সরকার। এহেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজ জন্মদিন। ১৯৪২-এ আজাদ হিন্দ ফৌজ (আইএনএ) গঠিত হয়েছিল। ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন সুভাষ। প্রতিষ্ঠিত হয় আজাদ হিন্দ সরকার। পরাধীন ভারতে প্রথম স্বাধীন সরকার। এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয় জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ক্রোয়েশিয়া, জার্মানি, ইতালি, মায়ানমার (তত্কালীন বার্মা) কয়েকটি দেশ।
আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বে নেতাজি
তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। এদিকে নেতাজি আজাদ ফৌজ নিয়ে লড়াই করছেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে সিঙ্গাপুরে ১৯৪২-এ প্রথম আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠিত হয়েছিল। পরে তা ভেঙে যায়। সুভাষ চন্দ্র বসু দক্ষিণ এশিয়ার বসবাসকারী ভারতীয়দের সাহায্যে আবার আইএনএ গঠন করেন এবং এই বাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন।
বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর হাতে প্রতিষ্ঠা
আজাদ হিন্দ বাহিনী বিপাকে ফেলেছিল ব্রিটিশদের। ১৯৪৪ সালে কোহিমা ও ইম্ফলে ব্রিটিশদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অধিকারও অর্জন করেছিল। এই সরকারের ছিল নিজস্ব মুদ্রা,বিচার ব্যবস্থা ও দণ্ডবিধি। আজাদ হিন্দ ফৌজে সাড়ে আট হাজার সেনা ছিলেন। এতে মহিলাদের একটি ইউনিটও ছিল। আজাদ হিন্দ বাহিনীর গঠন হয়েছিল জাপানে। এই বাহিনীর প্রতিষ্ঠা ভারতের বিপ্লবী নেতা রাসবিহারী বসু টোকিওতে করেছিলেন।
১৯৪৩-এ ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি হিসেবে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আজাদ হিন্দ বাহিনীর নিজস্ব ব্যাঙ্ক, কয়েন, ডাক টিকিট
আজাদ হিন্দ সরকারের ছিল নিজস্ব ব্যাঙ্কও। এর নাম ছিল আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক। এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৪৩-এ। এই ব্যাঙ্কের ১০ টাকার কয়েন থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকার নোটও ছিল। এক লক্ষ টাকার নোটে ছিল সুভাষ চন্দ্র বসুর ছবি। এই সরকারের ছিল নিজস্ব ডাক টিকিট ও তিরঙ্গা পতাকা।
নেতাজির অন্তর্ধান আজও বিস্তর রহস্যে মোড়া। তবু সুভাষের কোনও পূর্বাপর নেই।