কলকাতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা। এই বছর কলকাতায় বিজয় দিবস উদযাপনে বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ না করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সেনার তরফেও এই বিষয়টি নিয়ে কোনও কিছুই পরিষ্কার করে জানানো হয়নি।
১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বিজয় স্মরণে প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালিত হয়। কলকাতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেনার ইস্টার্ন কমান্ড। প্রতি বছর ভারতের তরফে বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের কলকাতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলছে না। শুক্রবার কলকাতায় এক সেনা কর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় এই বিষয়ে। তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়ে পরে জানাব।'
তবে, সেনা সূত্র বলছে যে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় বিজয় দিবস উদযাপনে মুক্তিযোদ্ধাদের আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কলকাতা আসার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলুপ্তির পথে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা কলকাতায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াটা খুবই অসুবিধাজনক।
মুক্তিবাহিনী ছিল বাংলাদেশের নাগরিক, সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত গেরিলা প্রতিরোধ বাহিনী, যারা তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সাহায্য করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনী তার বীরত্ব দিয়ে বিশ্বের মানচিত্র পরিবর্তন করেছিল। এই তারিখে পাকিস্তানি লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজি ভারতীয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এই যুদ্ধে পাকিস্তান এতটাই পরাজিত হয় যে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে ঢাকা স্টেডিয়ামে প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনাকে হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে হয়। যাইহোক, ভারত করুণা দেখিয়ে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির অধীনে এই সেনাদের মুক্তি দেয়। অর্থাৎ যুদ্ধ জয়ের পরও ভারত সংযম প্রদর্শন করতে থাকে।