ভারতীয় ক্রিকেট দলের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে ১৯৯৯ সালের আজকের দিনেই ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড কায়েম করেছিলেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ইনিংসে তিনি একাই ১০ উইকেট শিকার করেছিলেন। সেইসঙ্গে স্পর্শ করেছিলেন ইংল্যান্ডের অফস্পিনার জিম লেকারের রেকর্ডও। লেকার সাহেব ১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ৫৩ রানের বিনিময়ে ১০ উইকেট শিকার করেছিলেন। ম্যাচটি ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে আয়োজন করা হয়েছিল।
আসুন তার আগে প্রেক্ষাপটটা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। দু'ম্যাচের টেস্ট সিরিজ়ে প্রথমটা চেন্নাইয়ে ভারত অল্প ব্যবধানে (১২ রানে) হেরে গেছে। ফলে এই দিল্লি টেস্টটা ভারতকে জিততেই হত। নাহলে সিরিজ় ড্র করা সম্ভব হত না। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধ আবার এই ম্যাচটায় আলাদা মাত্রা যোগ করে দিয়েছিল।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে ভারত ৪২০ রানের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল। শুরুটা বেশ জমকালোই করেছিল ভারতের এই প্রতিবেশী দেশ। দলের দুই ওপেনার শাহিদ আফ্রিদি এবং সঈদ আনোয়ার প্রথম উইকেটে ১০১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এরপর ময়দানে নামেন কুম্বলে। ২৬.৩ ওভারে তিনি ৭৪ রানের বিনিময়ে বিপক্ষের ১০ উইকেট উপড়ে ফেলেন। দিল্লি ফিরোজ় শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত ২১২ রানে জয়লাভ করেছিল।
#OnThisDay in 1999, #TeamIndia spin legend @anilkumble1074 became the first Indian bowler and second overall to scalp all the 10 wickets in a Test innings. 👏👏
— BCCI (@BCCI) February 7, 2021
Watch that fantastic bowling display 🎥👇 pic.twitter.com/OvanaqP4nU
২০১৪ সালে বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে কুম্বলে জানিয়েছিলেন, "কোনও ক্রিকেটারই আগে থেকে ভাবতে পারে না যে সে একাই দশটা উইকেট শিকার করতে পারবে। ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ওটাই হয়ত আমার ভাগ্যে লেখা ছিল।"
পরবর্তীকালে ইন্ডিয়া টুডে'কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে কুম্বলে বলেন যে ওই বিশেষ দিনে তাঁর মনের মধ্যে ঠিক কী চলছিল। মাইলস্টোনের যত কাছাকাছি তিনি পৌঁছচ্ছিলেন, তাঁর মাথার মধ্যে কী ঘুরছিল।
ইন্ডিয়া টুডে মাইন্ড রক ২০১৫ অনুষ্ঠানে এসে কুম্বলে বলেন, "চা-পানের বিরতি পর্যন্ত আমি ছ'টা উইকেট নিজের ঝুলিতে পুরে নিয়েছিলাম। লাঞ্চ থেকে চা-পানের বিরতি পর্যন্ত টানা বল করেছিলাম আমি। বিরতিতে বসে বসে আমি নিজেই মনে মনে চিন্তা করছিলাম যে আগে টেস্ট পরিসংখ্যান থেকে এখানে আমার আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। তারপর মাঠে নেমে আমি সাত নম্বর উইকেটটা নিলাম। পরপর দুটো ডেলিভারিতে আট এবং নয় নম্বর উইকেটটাও চলে এল। আর তখনই আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে দশ নম্বর উইকেটটাও আমি পেতে পারি। আমার থেকেও বেশি বিশ্বাস ছিল দলের বাকি সতীর্থদের।" এরপর তো বাকিটা ইতিহাস।