বছরের শুরুতেই ভারতীয় ফুটবলে শোক সংবাদ। প্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলার শ্যামল ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ইস্টবেঙ্গলের সত্তরের শেষভাগে অসাধারণ ডিফেন্ডার ছিলেন শ্যামল ঘোষ। হৃদযন্ত্রে সমস্যা হওয়ায় দশদিন আগে তাঁর পেসমেকার বসেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফের অস্বস্তি শুরু হয়। এরপর বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। স্ত্রী পুত্র রয়েছেন। অকস্মাৎ মৃত্যুর খবরে সকলেই শোকস্তব্ধ। খোকন বসু মল্লিকের হাতে শুরু হয় তাঁর ফুটবল শিক্ষা। খিদিরপুরের হয়ে ময়দানে পা রাখেন শ্যামল ঘোষ। তার আগেই জুনিয়র বাংলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। খিদিরপুরের হয়ে নজরকাড়া ফুটবল খেলেন। এরপর তাঁকে সই করায় মোহনবাগান। সেখানে দুই মরশুম খেলে শ্যামল ঘোষ ১৯৭৪ সালে চলে আসেন ইস্টবেঙ্গলে।
ঐতিহাসিক পাঁচ গোলে জয়ের ম্যাচে লাল হলুদ রক্ষন সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন শ্যামল। ১৯৭৭ সালে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কত্ব করেছেন। ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করা ছাড়াও বাংলার একাধিক সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের সদস্য ছিলেন শ্যামল। প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জ্বলে ওঠার ক্ষমতা ছিল শ্যামল ঘোষের। মাঠ এবং মাঠের বাইরে প্রয়াত সুরজিৎ সেনগুপ্তর অভিন্ন হৃদয় বন্ধু ছিলেন।
ফুটবল খেলার পাশাপাশি দারুন আঁকতে পারতেন শ্যামল। সুদর্শন এই ডিফেন্ডার ঘরোয়া ফুটবলের সমস্ত ট্রফি জিতেছিলেন। কোচিংও করিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলকে। তাঁর হাত ধরেই ভাইচুং ভুটিয়ার বেড়ে ওঠা। শ্যামল ঘোষের অকস্মাৎ মৃত্যুতে স্তব্ধ ময়দান। ইস্টবেঙ্গল শোকপ্রকাশ করেছে। শোকপ্রকাশ করেছে আইএফএ এবং মোহনবাগানও। প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য খবরটি শুনে বাকরুদ্ধ। তিনি বলেন, “ভালো একজন বন্ধুকে হারালাম। ভালো মানুষ,ভালো ফুটবলার, সবকিছুই যেন বড় বেশি করে ওর মধ্যে ছিল। আর কথা বলতে ভালো লাগছে না।” আরেক প্রাক্তন ফুটবলার অলোক মুখোপধ্যায়ও শোকস্তব্ধ। তিনি বলেন, “কী আর বলার আছে। বয়সে বড় হলেও বন্ধুর মত মিশতেন। ওদের খেলা দেখেই তো আমার খেলা শেখা। বাবু মানি চলে গেলেন,চিন্ময় দা, সুরজিৎ দা,সুভাষ দা আর এবার শ্যামল দাও চলে গেলেন। বলার ভাষা নেই।”