মহিলা ক্রিকেট নিয়ে বরাবরই আগ্রহ প্রকাশ করেছে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল। এই বাংলা থেকে উঠে এসেছেন এমন দুই ক্রিকেটার, যাঁদের সাফল্য আপনাদের অনুপ্রাণিত করবেই। আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আসুন, এই দিনে আমরা বাংলার দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে আলোচনা করি।
আপনারা হয়ত এতক্ষণে বুঝতে পেরে গেছেন, কারা এই দুই ক্রিকেটার? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। এই দুই ক্রিকেটার হলেন ঝুলন গোস্বামী এবং রিচা ঘোষ।
ঝুলন গোস্বামী :
তাহলে বাংলার কিংবদন্তি মহিলা ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামীকে নিয়েই আগে আলোচনা করা যাক। নদীয়ার মেয়ে ঝুলন। তিনি জোরে বোলার হিসেবে জাতীয় ক্রিকেট দলে পা রাখলেও আপাতত তাঁকে অলরাউন্ডারের ভূমিকাই পালন করতে হচ্ছে। তিনি ভারতের জাতীয় মহিলা ক্রিকেটে দলের পাশাপাশি বেঙ্গল উওমেন, ইস্ট জোন উওমেন এবং এশিয়ান উওমেন একাদশের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন।
ঝুলনের কেরিয়ারের শুরুর দিকের গল্পটা একটু জেনে নেওয়া যাক। ছোটোবেলা থেকেই ঝুলন ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসতেন। স্থানীয় নবারুন সমিতিতে প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন তিনি। এরপর চাকদহ থেকে ভোরের ট্রেনে কলকাতায় এসে বিবেকানন্দ পার্কে নিয়মিত প্র্যাকটিস শুরু। সেখানে কোচ হিসেবে পেয়েছিলেন স্বপন সাধুকে। তিনিই ঝুলনকে পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার পরামর্শ দেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছেন বাংলার এই মেয়ে। একদিনের ক্রিকেটে সবথেকে বেশি উইকেট তাঁর দখলেই রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথরিন ফিটজপ্যাট্রিককে তিনি ইতিমধ্যেই পিছনে ফেলে দিয়েছেন। ২০০২ সালের ৬ই জানুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে ঝুলনের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল। মহিলাদের ক্রিকেটে অন্যতম দ্রুততম বোলার হিসেবে তাকে গন্য করা হয়। তাঁর কেরিয়ারের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৩১ রানে ৬ উইকেট। দেশের এই জোরে বোলার ১৬৪টি ম্যাচে ১৯৫টি উইকেট শিকার করেছেন। ২০০৫ এবং ২০১৭ সালে মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে পৌঁছয় ভারত। ২০১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে ১০ ওভারে, ৩টে মেইডেন ওভার সহ ২৩ রান দিনে ৩ উইকেট পান ঝুলন। তবে দুইবার বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছলেও বিশ্বকাপ জয় এখনও অধরা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে ঝুলন ৯৯৫ রান করেছেন।
রিচা ঘোষ :
এবার আসা যাক, বাংলার আরও এক মহিলা ক্রিকেটারের কথায়। শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা ঘোষ। ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঝুলনের থেকে বয়সে অনেকটাই ছোটো হলেও প্রতিভায় তিনি কোনও অংশেই কম নন।
২০২০ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই তিনি ICC মহিলা টি-২০ দলে সুযোগ পান। এই একই বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর অভিষেক ভারতীয় ক্রিকেট দলেও হয়েছিল। ভারত সেবার অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজ় খেলতে গিয়েছিল।
এর পরের মাসে জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলেও তাঁর অভিষেক হয়। এখনও পর্যন্ত তিনি তিনটে মহিলা টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন। রান করেছেন ৪৯। ১৮ তাঁর সর্বোচ্চ রান।