৩১ অক্টোবরের মধ্যেই জানাতে হত কোন দল কোন কোন ক্রিকেটারকে ধরে রাখতে চায়। সে মত বৃহস্পতিবার বিকেলেই ১০ দল তাদের ধরে রাখা ক্রিকেটারদের তালিকা জমা দিয়ে দিয়েছে। এবারের মেগা নিলামের আগে বিশেষ নজর ছিল রিটেনশন তালিকার দিকে। উপরন্তু একাধিক বড় নামের তারকাদের রিটেনশন নিয়ে ছিল জল্পনা। তাই আগ্রহটা সকলেরই একটু বেশিই ছিল। প্রত্যাশমতো চমক দেখাও গেল। এবার দেখে নেওয়া যাক, কোন দলের হাতে কত টাকা থাকল?
পঞ্জাব কিংস
পঞ্জাব কিংস প্রথম খেতাব জয়ের লক্ষ্যে আগের মেগা নিলামের আগে পুরনো ক্রিকেটারদের ছেঁটে ঢেলে দল সাজিয়েছিল পাঞ্জাব। তবে এখনও প্রথম খেতাব অধরা। ফের একবার আবারও সেই পথেই হাঁটল তাঁরা। নতুন কোচে রিকি পন্টিংয়ের অধীনে নতুনভাবে শুরু করতে আগ্রহী পঞ্জাব কিংস। কেবল প্রভসিমরণ ও শশাঙ্ক সিংহকে রিটেন করেছে। এই দুই তারকাকে দলে রিটেন করতে খরচ হয়েছে মোট ৯.৫ কোটি। আসন্ন নিলামে আবারও প্রীতি জিন্টার দলের হাতে খরচের জন্য রয়েছে সর্বাধিক টাকা থাকবে, যার মূল্য ১১০.৫ কোটি।
কলকাতা নাইট রাইডার্স
গতবারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআর কিন্তু অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে রিটেন করেনি। পরিবর্তে রিঙ্কু সিংকে সর্বাধিক ১৩ কোটি দিয়ে রিটেন করেছে। বাকি পাঁচ খেলোয়াড় মিলে খরচ হয়েছে ৫৭ কোটি। নাইটদের হাতে নিলামে খরচ করার জন্য এখনও রয়েছে ৫১ কোটি।
রাজস্থান রয়্যালস
সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থানের হাতে আরও কম ৪১ কোটি রয়েছে। দ্বিতীয় ট্রফি জেতার জন্য ঝাঁপাবে রাজস্থান। তবে নিলামের আগে তাদের হাতে খুব বেশি টাকা নেই। সেটাই চিন্তার।
চেন্নাই সুপার কিংস
ধোনিদের দিকে অনেকেরই নজর ছিল। হলুদ ব্রিগেড পাঁচ ক্রিকেটারকে রিটেন করেছে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে কিন্তু পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন দল আনক্যাপড হিসাবেই ৪ কোটিতে দলে রেখেছে। এর ফলে বিরাট লাভ হয়েছে তাঁদের। সিএসকের ঝুলিতে এখনও নিলামের খরচ করার জন্য ৫৫ কোটি অবশিষ্ট রয়েছে। আর পাঁচ ক্রিকেটার রিটেন করায় একটি আরটিএম কার্ডও কিন্তু মেগা নিলামে ব্যবহার করত পারবে তাঁরা।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
টুর্নামেন্টে পাঁচ খেতাবজয়ী আরেক দল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নিয়েই আগ্রহ কম ছিল না। গত মরশুমে নেতৃত্ব বদল, দল সবার নীচে শেষ করা, অন্দরমহলে ঝগড়া, নানাবিদ রিপোর্টে সামনে এসেছিল। জোর জল্পনা ছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনেকেই এবারের নিলামে উঠবেন, থাকবেন তাঁরা পল্টনে। তবে সেই জল্পনাকে ১০ গোল দিয়ে রোহিত, হার্দিক, সূর্য, বুমরা অর্থাৎ দলের ভিত ধরে রেখেছে তাঁরা। মায়ানগরীর ফ্র্য়াঞ্চাইজির হাতেএখনও নিলামে খরচের জন্য রয়েছে আরও ৪৫ কোটি।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
গত বারের রানার্স আপ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হাতেও ৪৫ কোটি টাকা রয়েছে। রিটেন করা ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বাধিক, ২৩ কোটিতে হেনরিখ ক্লাসেন কিন্তু এই দলেই রয়েছেন। মিচেল স্টার্কের পর বেতন হিসাবে ক্লাসেনর ২৩ কোটিই সর্বকালের সর্বাধিক। প্রোটিয়া তারকাকে ছাড়াও কামিন্স, হেড, অভিষেক শর্মাদের বড় দামে ধরে রেখেছে নিজামের শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজি।
গুজরাত টাইটান্স
অপরদিকে গুজরাত টাইটান্সের তরুণ অধিনায়ক শুভমন গিল সর্বোচ্চ নয়, বরং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে রিটেন হয়েছেন। দলের স্বার্থে যে তিনি কম টাকায় রাজি হয়েছেন খেলতে, সেই খবর আগেই শোনা গিয়েছিল। হলও তাই। শুভমনকে ১৬.৫ কোটিয় টাকায় রিটেন করে এক বারের চ্যাম্পিয়নরা। তাঁদের প্রথম রিটেনশন, ১৮ কোটি টাকায় গত দশকের সেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার রশিদ খান। গুজরাত ৬৯ কোটি নিয়ে নিলামে নামতে পারবে।
লখনউ সুপার জায়ান্ট
লখনউ সুপার জায়ান্টস জল্পনা মতোই অধিনায়ক কেএল রাহুলকে ছেঁটে ফেলেছে। লখনউয়ের কাছে পাঁচ খেলোয়াড় রিটেন করার পরেও ঝুলিতে এখনও ৬৯ কোটি টাকা রয়েছে। তাঁদের প্রথম রিটেনশন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মহাতারকা নিকোলাস পুরান। লখনউয়ের মতো দিল্লি ক্যাপিটালসও অধিনায়ক ঋষভ পন্থকে রিটেন করেনি। অক্ষর পটেল, কুলদীপ যাদবের পাশাপাশি বাংলার অভিষেক পোড়েলকে রিটেন করেছে রাজধানীর ফ্র্যাঞ্চাইজি। দিল্লির কাছে আরও ৭৩ কোটি টাকা রয়েছে নিলামে খরচ করার জন্য।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
সবার শেষে আসা যাক আরসিবির কথায়। বিরাট কোহলিকে নাগাড়ে ১৮তম মরশুমের জন্য ধরে রেখেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তবে কোহলিসমেত বাদে আর মাত্র দুই ক্রিকেটারকে রিটেন করেছে ভারতের 'গার্ডেন সিটি'র দল। তাঁরা হলেন যশ দয়াল ও রজত পাতিদার। কোহলিদের দলের কাছে এখনও ৮৩ কোটি টাকা রয়েছে। অঙ্কটা কিন্তু নেহাত কম নয়।