শেষ হয়েছে প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪। অনেক দেশের মতো উত্তর কোরিয়ার অ্যাথলিটরাও পদক নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এমন অনেকে আছেন যাঁরা পদক পাননি। শোনা যায়, পদক না পেলে ফিরলে উত্তর কোরিয়ার অ্যাথলিটদের নাকি শাস্তির মুখে পড়তে হয়। সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন নাকি শাস্তি দেন খেলোয়াড়দের। সত্যিই কি তাই? পদক ছাড়া ফিরলে সেই দেশের অ্যাথলিটদের কী শাস্তি দেওয়া হয়?
২০২৪-এর এবার উত্তর কোরিয়ার ১৬ জন অ্যাথলিট নানা ইভোন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন পদক জিতেছেন। যার মধ্যে ২ রুপো এবং ৪টি ব্রোঞ্জ রয়েছে। এবার উত্তর কোরিয়া একটিও স্বর্ণপদক জিততে পারেনি। যদিও অলিম্পিকে সব থেকে বেশি গর্বের পদক গোল্ডকে বিবেচনা করা হয়।
এবছর অলিম্পিক শুরুর সময় থেকেই উত্তর কোরিয়ার অ্যাথলিটরা শিরোনামে ছিলেন। কারণ, তাঁদের দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাথলিটদের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যায়। দক্ষিণ কোরিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম থাকার পরও একসঙ্গে ছিলেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। এই ছবিগুলো সামনে আসার পর অনেকেই বলতে শুরু করেন, কিং জং এবার তাঁর দেশের অ্য়াথলিটদের শাস্তি দিতে পারেন। কারণ, তাঁরা বিপক্ষ দেশের অ্যাথলিটদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন।
২০১২ সালে অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়া ৪টি স্বর্ণপদক জিতেছিল। অ্য়াথলিটরা দেশে ফিরে গেলে সরকারের তরফে তাঁদের অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। তবে তখন এও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তী অলিম্পিকে ৫ স্বর্ণপদক আনতে হবে। তার পরের রিও অলিম্পিকেও একই সংখ্যর স্বর্ণপদকের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। পদকের মোট টার্গেট ছিল ১৭ টি। তবে উত্তর কোরিয়ার ক্রীড়াবিদরা রিওতে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেননি।
প্যারিস অলিম্পিকে টার্গেট পূরণ না হওয়ায় উত্তর কোরিয়ার অ্যাথলিটদের কী শাস্তি দেওয়া হবে সেটা ঠিক এখনও জানা যায়নি। তবে এর আগের অলিম্পিকগুলোতে কেমন শাস্তির মুখে অ্যাথলিটদের পড়তে হয়েছিল তা থেকে অনেকটাই ধারণা পাওয়া সম্ভব।
উত্তর কোরিয়া করোনার কারণে প্যারিস অলিম্পিকের আগে টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেয়নি। তার আগে রিওতে অ্যাথলিটদের নামিয়েছিল কিমের দেশ। জানা যায়, উত্তর কোরিয়ায় অলিম্পিকে কেউ পদক জিতলে তাঁকে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়। না জিতলে শাস্তি। ২০১২ সালের লন্ডন গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী ক্রীড়াবিদরা যখন নিদের দেশে ফেরেন তখন তাঁদের সম্মান জানানো হয়। প্রত্যেককে একটা করে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু, যাঁরা পদক জিততে পারেননি তাঁদের উপর শারীরিক অত্যাচার করা হয়। এমন কাজ দেওয়া হয় যা সম্মানের নয়।
দ্য কোরিয়া টাইমস এবং দ্য সান সহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া আউটলেটের প্রতিবেদন অনুসারে, যাঁরা পদক পাননি তাঁদের নিম্নমানের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়। কোনও কোনও অ্যাথলিটকে তো কয়লা খনিতে কাজ করানো হয়।